সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ব্যাংকের কার্ডে ই-কমার্স খাতে লেনদেন হয়েছে ১০ হাজার ২৮ কোটি টাকা। জুলাই মাসে লেনদেন হয়েছিলো ৯৯২ কোটি টাকা। এরপরের মাসে লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিলো। আগস্টে অনলাইন কেনাকাটায় লেনদেন হয় ১ হাজার ৪১ কোটি টাকা। এরপর সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৮৬ কোটি, অক্টোবরে ১ হাজার কোটি, নভেম্বরে ১ হাজার ১৬২ কোটি, ডিসেম্বরে ১ হাজার ১৩০ কোটি, জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৭৯ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ১৭১ কোটি এবং মার্চ মাসে ১ হাজার ২২৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়।
ই-কমার্সে সরকারের বিশেষ নজরের কারণে প্রতারণা অনেকটাই কমে এসেছে। এছাড়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ নিজস্ব সেটেলমেন্ট হিসেবে নেওয়াসহ নানা নীতির কারণে এই খাতে আস্থা ফিরছে মানুষের। গ্রাহকদের আগ্রহ যদি বাড়তে থাকে তাহলে এই খাত আরও বড় হবে বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে ই-কমার্স খাতে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে এলে এই খাতে গ্রাহকদের আস্থাহীনতা তৈরি হয়। অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অগ্রিম টাকা নিয়ে দীর্ঘদিনেও পণ্য বা সেবা সরবরাহ করছে না। এ নিয়ে ২০২১ সালের জুনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশিকা জারি করে। বাংলাদেশ ব্যাংক ওই নির্দেশনার আলোকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিলো, পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ নিজস্ব সেটেলমেন্ট হিসেবে ধারণ করবে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পণ্য সরবরাহের পর দাম পাবে। লেনদেন নিষ্পত্তিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্যাংক, এমএফএস বা ই-ওয়ালেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কাজ করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের জুনে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়ে রেকর্ড ১ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা হয়েছিল। কিন্তু ই-কমার্স প্রতারণার প্রভাবে এক মাসের ব্যবধানে তা কমে দাঁড়ায় ৭৪২ কোটি টাকায়। তবে সরকারের ডিজিটাল কমার্স আইন ২০২১ প্রণয়নের পর গত বছরের এপ্রিলে আবার হাজার কোটির মাইলফলক স্পর্শ করে এই খাতের বেচাকেনা। ধীরে ধীরে ওই প্রতারণার প্রভাব কমে এ খাতের আস্থা ফিরছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) ৩ হাজার ৪৮১ কোটি টাকার লেনদেন হয়।
অর্থসংবাদ/এসএম