ইউরো: আরও অনেক দেশের ভবিষ্যত মুদ্রা

ইউরো: আরও অনেক দেশের ভবিষ্যত মুদ্রা
মানবজাতির ইতিহাসে এমন পরীক্ষা কখনো হয়নি৷ ইউরোপের একাধিক দেশ স্বেচ্ছায় নিজস্ব মুদ্রা ত্যাগ করে একক মুদ্রা গ্রহণ করে অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নিয়েছে৷ ২৫ বছর আগে ইউরোপীয় অভিন্ন মুদ্রা হিসেবে ইউরো চালু করার লক্ষ্যে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠন করা হয়৷ এরপর ১৯৯৯ সালের ১লা জানুয়ারি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১১টি সদস্য দেশে ‘অদৃশ্য' মুদ্রা হিসেবে সমান্তরালভাবে ইউরো চালু হয়৷ ২০০২ সালের ১লা জানুয়ারি প্রথম ইউরো ব্যাংক নোট ও পয়সা হিসেবে সেন্ট সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ সেইসঙ্গে সদস্য দেশগুলির জাতীয় মুদ্রা লোপ পায়৷ বর্তমানে ইইউ-র ২০টি দেশে এই মুদ্রা চালু আছে৷ ৩৪ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ এই মুদ্রা ব্যবহার করছেন৷

বুধবার সন্ধ্যায় জার্মানির ফ্রাংকফুর্ট শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক – ইসিবি-র রজত জয়ন্তী উৎসব পালিত হয়৷ ব্যাংকের বর্তমান প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দ এ দিন ২০টি সদস্য দেশের সংবাদপত্রে ব্যাংকের সাফল্য তুলে ধরেন৷ ইউরো এলাকায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ইসিবি-র ভূমিকার উপর জোর দেন তিনি৷ অনেক বছর ধরে সেই মাত্রা কম থাকার পর বর্তমানে মূল্যস্ফীতির উচ্চ হারে রাশ টানতে ইসিবি উদ্যোগ নিলেও অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বদলানোর কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না তিনি৷ তবে সেই মাত্রা দুই শতাংশে ফিরিয়ে আনতে সূদের হার বাড়ানোসহ সব রকম পদক্ষেপ নেবার অঙ্গীকার করেন লাগার্দ৷

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রোব্যার্তা মেৎসোলা এবং ইইউ সরকার পরিষদের প্রেসিডেন্ট শার্ল মিশেল ইসিবি-র জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷ শলৎস ইউরোপীয় অভিন্ন মুদ্রাকে ইউরোপীয় সমন্বয়ের সবচেয়ে সফল প্রকল্পগুলির অন্যতম হিসেবে বর্ণনা করেন৷ তার মতে, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘স্থিতিশীলতার নোঙর' হিসেবে কাজ করছে৷ ভবিষ্যতে আরও দেশ অভিন্ন মুদ্রা হিসেবে ইউরো গ্রহণ করবে বলে শলৎস আশা প্রকাশ করেন৷

ইউরোপীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে ইউরো মুদ্রা ও ইসিবি-র ভূমিকার প্রশংসা সত্ত্বেও এই প্রকল্পের কাঠামোগত দুর্বলতা নিয়ে বিতর্ক কম নেই৷ কারণ ২০টি দেশে অভিন্ন মূদ্রা চালু হলেও সে সব দেশের আর্থিক ও অর্থনৈতিক নীতির মধ্যে কোনো সমন্বয়ের বাধ্যবাধকতা এখনো নেই৷ ফলে প্রায়ই স্বার্থের সংঘাত দেখা যায়৷ বিশেষ করে ইউরোপের উত্তর ও দক্ষিণের দেশগুলির মধ্যে মৌলিক নীতি নিয়ে মতবিরোধ বার বার সমস্যা সৃষ্টি করে৷

ইউরো মুদ্রার এমন অন্তর্নীহিত দুর্বলতা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে ইসিবি-র ভূমিকা বার বার প্রশংসা কুড়িয়েছে৷ বিশেষ করে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে ইউরো-র স্বার্থ রক্ষায় পরিস্থিতি সামল দিতে ইসিবি যেভাবে জোরালো উদ্যোগ নিয়েছে, তা আর্থিক বাজার স্থিতিশীল করতেও সাহায্য করেছে৷ বিশেষ করে ২০১২ সালে ইউরো এলাকায় সংকটের সময়ে ইসিবি-র তৎকালীন প্রধান মারিও দ্রাগি ‘ওয়াটএভার ইট টেকস্' শীর্ষক ভাষণে যে কোনো মূল্যে ইউরো বাঁচানোর অঙ্গীকার করে গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছিলেন৷ তবে অসময়ে সুদের হার বাড়ানো বা কমানোর ক্ষেত্রে ইসিবি-র কিছু ভুলত্রুটি নিয়ে সমালোচনা হয়েছে৷

অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ সভা
শরীয়তপুরে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, ব্যবসায়ী আহত
জাকসুর ভোট গণনা শেষ হতে পারে বিকেল ৪টায়
নির্বাচনের জন্য দেড় লাখ পুলিশকে দেওয়া হবে বিশেষ প্রশিক্ষণ
শেষ কার্যদিবসে সূচকের পতন, সামান্য কমেছে লেনদেন
২৩ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৭৪ কোটি ডলার
৭ জেলায় ঝড়-বজ্রবৃষ্টির আভাস, সমুদ্রবন্দরে সতর্কতা
লেনদেনের শীর্ষে বিএসসি
আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট এমএফ ওয়ান: স্কিম ওয়ানের সর্বোচ্চ দরপতন
দেশের রিজার্ভ কমলো