বুধবার (৩১ মে) সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার সই করা এক বিবৃতিতে নিন্দা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ড. মুহম্মদ ইউনুস গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমের মাধ্যমে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জনের করেছেন। কিন্তু আইনের উর্ধ্বে কেউ নন। সুতরাং ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তা অবশ্যই বিচারিক প্রক্রিয়ায় আসতে হবে। এটিই সভ্য সমাজের রীতি। গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে প্রাপ্ত অভিযোগের বিষয়ে দুদক তদন্ত করে ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে ড. মুহম্মদ ইউনুসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তিনি দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং-এর সাথে জড়িত না হলে নিশ্চয়ই আইনী প্রক্রিয়ায় সেটি প্রমাণিত হবে। তথাকথিত কিছু কিছু সংগঠন বিবৃতির মাধ্যমে যে প্রতিবাদ করেছে তা আইনের শাসনের পরিপন্থী ও দুরভিসন্ধিমূলক বলে আমরা মনে করি। কেননা, তারা যে রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসী সেই রাজনৈতিক দলটি হত্যা-ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আইনের শাসন আর গণতন্ত্রকে হত্যার মধ্যদিয়ে জন্ম নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত অর্জনকে পদদলিত করে এদেশকে দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল। এদের নেতার দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং বিচারের মাধ্যমে প্রমাণিত।
এতে আরও বলা হয়, এই ষড়ষন্ত্রের শিকড় যে আরো গভীরে প্রোথিত তা স্পষ্ট হয়েছে বিবৃতিদাতাদের প্রদত্ত তথ্যে। ১৯৭৮ সালে একজন অবৈধ সামরিক স্বৈরশাসকের প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি পুরস্কারই প্রমাণ করে ড. মুহম্মদ ইউনুসের সাথে তাদের সম্পর্ক অনেক পুরনো। মূলতঃ বাংলাদেশ বিরোধী প্রচার-প্রচারণা ও বিরাজনীতিকরণের ধারা প্রতিষ্ঠার অনুঘটকদের সাথে ড. ইউনুসের রয়েছে দীর্ঘদিনের সখ্যতা। এ কারণেই প্রফেসর ইউনুসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার প্রতিবাদ করতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির কথা তুলে এনে বস্তুতঃ অর্থে তারা ঘোলাজলে মাছ শিকারের অপতৎপরতার বিষয়টিই স্বীকার করে নিলেন। বিএনপি-জামাতের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপকৌশল এবং ষড়যন্ত্রের কারণে ওয়ান-ইলেভেন সৃষ্টি এবং ধোঁয়াশাচ্ছন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে অকার্যকর করে ভূঁইফোড় রাজনৈতিক দল গঠন করে এসব ব্যক্তিদের ক্ষমতার মসনদে বসানোর অশুভ তৎপরতা কারা চালিয়েছিল তা জাতি ভুলে যায়নি।
বিবৃতিতে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি এসব চক্র আবারও অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। আমরা এসকল চক্রান্তকারীদের ব্যাপারে দেশপ্রেমিক নাগরিকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। নির্দোষ কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। একই সাথে ব্যক্তির পরিচয় বিবেচনায় না নিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।