বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দিন শেষে এ তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ। এসময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল ১০ মাসে আদায় হয়েছিল ২ লাখ ২৭ হাজার ৭৩৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
গত বছরে একই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। এ বছর একই সময়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৫ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে আমদানি কম হয়েছে। আমদানি শুল্কও আদায় কম হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হয়নি, কোম্পানির লাভও হয়নি। এ জন্য ট্যাক্স কম আদায় হয়েছে। বছর শেষে রাজস্ব আদায়ের এমন হারই থাকবে। অর্থাৎ চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ লাখ ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায় হতে পারে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও এমন ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, সব মিলে এমন অবস্থা, আগামী বছরেও এমনটি অব্যাহত থাকবে। আমরা আগেও এমন ধারণা করেছিলাম।
যে সময় রাজস্ব আদায়ের এ আভাস এলো, ঠিক তখন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে রাজস্ব আদায়ের বড় লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে। আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য স্পর্শ করতে হলে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের রাজস্বের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় করতে হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কর্মসূচি বাস্তবায়নে বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট ধরনের সেবা নিতে হলে ন্যূনতম কর দেওয়ার বাধ্যবাধকতার মতো বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা রাজস্ব আদায়ের প্রাক্কলনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। আবার করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রাজস্ব আদায়ে কিছু নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ে কিছু পলিসির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ন্যূনতম ২ হাজার টাকা কর দেওয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক তুলে নেওয়া হয়েছে। এ রকম কিছু উদ্যোগের ফলে প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব হয়তো কিছুটা বাড়বে। তবে যে লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে তা অর্জন করা কঠিন হবে, যা জুলাই-এপ্রিল এই ১০ মাসের রাজস্ব আদায়ের চিত্রই বলে দিচ্ছে।
অর্থসংবাদ/এসএম