শনিবার (১৭ জুন, ২০২৩) সকাল ১১টায় রাজধানীর ‘ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সাগর-রুনি মিলনায়তনে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহাম্মদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাট্রিবিউনের হেড অব সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং সিরাজুল ইসলাম, ডেইলি আমাদের সময়ের হেড অব অনলাইন মোহাম্মদ আলম, কালবেলা নিউজের অনলাইন এডিটর পলাশ মাহমুদ, জুমবাংলা ডটকমের সম্পাদক মো. মাহামুদুল হাসান (হাসান মেজর), আরটিভির হেড অব ডিজিটাল অ্যান্ড স্যোশাল মিডিয়া কবীর আহমেদ, চ্যানেল২৪ এর হেড অব ডিজিটাল মিডিয়া রাজিব খান।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মিডিয়া ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের শতাধিক সাংবাদিক ও কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি-মাইন উদ্দিন সোহাগ (হেড অব মার্কেটিং অর্থসংবাদ), সহ-সভাপতি-মো. নাছির উদ্দিন-(ম্যানেজার বার্তা ২৪), রায়হান রবিন (এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, চ্যানেল ২৪) এবং মো. আরিফ (এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার আরটিভি), যুগ্ম-সম্পাদক-সাফায়েত আহমেদ (সিনিয়র এক্সিকিউটিভ-ইত্তেফাক), সাংগঠনিক সম্পাদক-মনিরুজ্জামান মনু (সিনিয়র এক্সিকিউটিভ-ডিজিটাল, দেশটিভি), অর্থ সম্পাদক- আতিকুল ইসলাম (ডেপুটি ম্যানেজার, গ্লোবাল টিভি), দপ্তর সম্পাদক-সৈয়দ জাফরান হোসেন নূর (অনলাইন এডিটর, সাননিউজ২৪)
আরও রয়েছেন- শিক্ষা ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক-ইয়াসমিন আক্তার (রিপোর্টার-আরটিভি), আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক- মোশতাক রাইহান (এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার ডিজিটাল, জাগোনিউজ ২৪), ক্রীড়া সম্পাদক- মানিক মহিউদ্দিন (সিনিয়র এক্সিকিউটিভ, গ্লোবাল টিভি), আপ্যায়ন সম্পাদক-আনোয়ার হোসেন (সিনিয়র এক্সিকিউটিভ-বাংলা ট্রিবিউন), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক- মো. মোস্তফা সজল (অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রডিউসার, নেক্সাস টিভি), প্রচার সম্পাদক-জহিরুল ইসলাম (সিনিয়র এক্সিকিউটিভ, ঢাকা পোস্ট) এবং ইব্রাহিম খলিল ফয়সাল (এক্সিকিউটিভ কমিউনিকেশন অ্যান্ড ব্র্যান্ডিং অর্থসংবাদ), নারী বিষয়ক সম্পাদক-নিফাত সুলতানা-রিপোর্টার কালবেলা, সাধারণ সদস্য-রুহুল কে সাগর (হেড অব ডিজিটাল, যুগান্তর), পারান মাঝি (সিনিয়র অ্যাক্সিকিউটিভ ব্রডকাস্ট, জাগোনিউজ২৪) এবং আশরাফুল ইসলাম রাসেল (দুরবিন, নিউজ ও প্রোগ্রাম প্রেজেন্টার)।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, গণমাধ্যমে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিক ও মিডিয়া কর্মীদের সংগঠনের প্রয়োজন রয়েছে। এসব সংগঠনের মাধ্যমে একই পেশায় নিয়োজিত কর্মীদের মধ্যে যেমন যোগাযোগ বাড়ে, তেমনি তুলনামূলক কম দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীরা দক্ষদের সঙ্গে মেশার সুযোগ পেয়ে তারাও দক্ষ হয়ে উঠেন। সঙ্গে সম পেশার কর্মীরা একজন-অন্যজনের পাশেও থাকার সুযোগ পান। আশা করি, ডিজিটাল মিডিয়া ফোরামও কর্মীবান্ধব হয়ে উঠবে।
বাংলাট্রিবিউনের হেড অব সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে নিজেদের প্রশিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতেই ডিজিটাল মিডিয়ার যাত্রা। আশা করছে সংগঠনটি গতানুগতিক না হয়ে কাজের মাধ্যমে নিজেদের স্বাক্ষর রাখবে।’
ডেইলি আমাদের সময়ের হেড অব অনলাইন মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘ডিজিটাল মিডিয়ার কর্মী শুধু বললেই হবে না, নিজেদেরও ডিজিটাল বানাতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে নিজেদের যোগ্য করে তুলতে হবে। তাহলেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়িত হবে।’
কালবেলা নিউজের অনলাইন এডিটর পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘ডিজিটাল, সেলস ও মার্কেটিংকে এক কাতারে আনতে ডিজিটাল মিডিয়া ফোরাম যারপর নেই চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে আশা করছি। নতুনদের জন্য শুভকামনা থাকলো।’
আরটিভির হেড অব ডিজিটাল অ্যান্ড স্যোশাল মিডিয়া কবীর আহমেদ বলেন, ‘এই সময়ে ডিজিটাল মিডিয়া ফোরামের মতো সংগঠনের প্রয়োজন রয়েছে। দক্ষতা বৃদ্ধি ও আন্তঃযোগাযোগের ক্ষেত্রে আশা করছি সংগঠনটি মূর্খ্য ভূমিকা রাখবে।’
চ্যানেল২৪ এর হেড অব ডিজিটাল মিডিয়া রাজিব খান বলেন, ‘এই সংগঠনের সব সদস্যই তরণ। সংগঠনটি সৃষ্টির পেছনে তাদের প্রচেষ্টা ও উদ্যম আমার ভালো লেগেছে। যেখানে সবাই নিজেদের নিয়ে ভাবে, সেখানে ডিএমএফের সদস্যরা একটি পুরো ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে ভাবছেন এটি সত্যিই প্রশংসনীয়। এগিয়ে যেতে হবে।’
জুমবাংলা ডটকমের সম্পাদক মো. মাহামুদুল হাসান (হাসান মেজর) বলেন, ‘ডিজিটালে যারা কাজ করছেন, তাদের সবচেয়ে বেশি দরকার নিজেদের যুগোপযোগী হওয়া এবং এই পেশায় নিয়জিত সবার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা। আপনারা সেই পথেই হাঁটছেন।’
প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমানে টাকা হলেই সম্পাদক হওয়া যায়। দক্ষতা বাড়ানো এখন বিষয় না। এটি সাংবাদিকতার জন্য সবচেয়ে শুভকর নয়। তাই ডিজিটাল মিডিয়া ফোরামের সদস্যদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। পিআইবি সাংবাদিক বানায় না, তবে যারা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে কাজ করছেন, তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে পিআইবি সবসময় পাশে থাকে, ডিজিটাল মিডিয়া ফোরামেরও পাশে থাকবে।’
জাফর ওয়াজেদ আরও বলেন, ‘সংগঠনটি খুলতে দেরি হয়ে গেছে। আমি মনে করি সংগঠনটি আরও আগে খোলা উচিত ছিল। তবে যাইহোক, সংগঠনটি যে এখন খোলা হয়েছে, এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। সংগঠনটি যেন সমাজের মাইলফলক হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সাংবাদিকতাকে মনে প্রাণে লালন করতে হবে। শুধু সংগঠন খুললেই হবে না। সংগঠনকে জিয়ে রাখতে হবে। পরিচর্যা করতে হবে। আর এই ফোরামকে কিভাবে পরিচালনা করা যায় তার একটা রুপরেখা তৈরি করতে হবে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রফেসর ড. আবুল মনসুর আহাম্মদ বলেন, 'আমাদের সংগঠনগুলো খুলে অন্যান্য কাজে ব্যবহার হয়। এদিকে খেয়াল রাখতে হবে সংগঠনটি যেনো অন্যকাজে ব্যবহার না হয়। তবে আপনাদের ধন্যবাদ জানাই শুধু সাংবাদিক নিয়ে নয়, ডিজিটাল-মার্কেটিং ও সেলস বিভাগ থেকেও লোক নিয়েছেন। আশাকরি এটি খুব ফলপ্রসূ হবে। ডিজিটাল মিডিয়া ফোরাম যেনো সাংবাদিকতাকে ডিজিটালাইজেশন করতে কাজ করতে পারে, সে আশা ব্যক্ত করছি। তথ্য উপাত্তের সত্যতা যাচাই করতে হবে। আমার বিশ্বাস আপনাদের এই ফোরাম অনেক দূর এগিয়ে যাবে। যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের পাশে পাবেন।
ড. আবুল মনসুর আরও বলেন, ‘সমবায় সাংবাদিকতা ছাড়তে হবে। সমবায় সাংবাদিকতা হচ্ছে- একজনে রিপোর্ট করেন, আর বাকিরা কপিপেস্ট মারেন। এটা সাংবাদিকতার অপচর্চা। ডিজিটাল মিডিয়া ফোরামের সদস্যদের এই বিষয়ে শতর্ক থাকতে হবে।’
প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিক ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কর্মীদের মধ্যে পেশাগত সৌহার্দ্য ও ঐক্য বজায় রাখা, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য পরিবেশন ও যথাযথ চিত্রে উপস্থাপন করা এবং সর্বোপরি কর্মীদের যোগাযোগের উন্নতি, দক্ষতা বাড়ানো ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ডিজিটাল মিডিয়া ফোরাম গঠিত হয়েছে। ফোরামের উপদেষ্টা হিসেবে থেকে পরামর্শ দিচ্ছেন বিভিন্ন মিডিয়ার সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানরা।