বাংলাদেশের প্রতি সাতজনে একজন বাস্তুচ্যুত হতে পারেন

বাংলাদেশের প্রতি সাতজনে একজন বাস্তুচ্যুত হতে পারেন

বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ বাড়তে থাকলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের প্রতি সাতজনে একজন বাস্তুচ্যুত হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি আমিনা জে. মোহাম্মদ।


শনিবার (১ জুলাই) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘রোড টু সাস্টেইন্যাবল ডেভলপমেন্ট গোলস সামিট ২০২৩’ শীর্ষক সেমিনারে এমন আশঙ্কার কথা জানান তিনি।


জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি বলেন, জলবায়ু এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) পদক্ষেপ একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দুর্ভাগ্যের বিষয়, জলবায়ুসহ বেশ কিছু এসডিজি সূচক ভুল দিক নির্দেশ করছে। মানুষের ক্ষয়ক্ষতি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এখন পর্যন্ত হিসাব করে দেখা গেছে, ২০৫০ সালে বাংলাদেশের প্রতি সাতজনে একজন ব্যক্তি জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়বে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেক নিম্নভূমির অঞ্চলও মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হবে।


তিনি সতর্ক করে বলেন, বিশ্বে কার্বন নিঃসরণ বাড়ছে। এতে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ছুঁতে যাচ্ছে দ্রুতই। কাজেই প্যারিসচুক্তি বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে জনসংখ্যার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ লাভবান হতে পারে।


জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি বলেন, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের ৮০ শতাংশ আসে জি২০ দেশগুলো থেকেই। কাজেই আরও পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তাদের। বিশেষ করে কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনতে তারা পরস্পরকে সহায়তা করতে পারে। এছাড়া জলবায়ু সংকটের কারণে যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে তাদের কষ্টের বোঝা কমিয়ে আনতে ধনী দেশগুলো একে অপরকে সাহায্য করতে পারে।


তিনি আরও বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরে যে এসডিজি সম্মেলন হতে যাচ্ছে, সেটি আমাদের সবার জন্য একটি সন্ধিক্ষণ। এজন্য এসডিজি বাস্তবায়নে ফের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা দ্বিগুণ জোরদার করতে হবে।


এসডিজি রূপান্তরের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বিশ্বের সব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আমিনা জে. মোহাম্মদ বলেন, এ জন্য স্পষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। ২০২৭ সালের মধ্যে দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে সুনির্দিষ্ট মাপকাঠিকে কেন্দ্র করে অগ্রসর হতে হবে এবং এ সংক্রান্ত বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে জাতীয় পরিকল্পনাও থাকতে হবে।


টেকসই খাদ্যব্যবস্থা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব রুখতে জ্বালানি রূপান্তর, শিক্ষা, ডিজিটাল রূপান্তর, চাকরি ও সামাজিক সুরক্ষার দিকে বেশি নজর দেওয়ার কথা বলেন জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি।


তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো একটি উদাহরণ। খাদ্যব্যবস্থা রূপান্তরে অনুপ্রেরণাদায়ক অগ্রগতি ও তা পর্যবেক্ষণে ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে বাংলাদেশের কাজ আমরা উদাহরণ হিসেবে দেখতে পারি।


তিনি আরও বলেন, ২৪-২৬ জুলাই পর্যন্ত ইতালির রোমে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের ‘ফুড সিস্টেমস স্টকটেকিং মোমেন্টে’ বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করবে বলে প্রত্যাশা করছি।


২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া জাতিসংঘের ‘খাদ্য ব্যবস্থা’ সম্মেলনের পরবর্তী কর্মসূচি হচ্ছে ‘দ্য ইউএন ফুড সিস্টেমস স্টকটেকিং মোমেন্ট’।


সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, অ্যাকশন অ্যাইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, ইউনিলিভার বাংলাদেশের ডিরেক্টর শামীমা আক্তার প্রমুখ।


অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু