মঙ্গলবার (৪ জুলাই) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিনতাইকারীর হামলায় আহত ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সহকারী প্রযোজক রাকিবুল হাসানকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঈদের বন্ধে রাজধানীতে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঈদের আগেই অনেক ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করছিলাম। কিন্তু এরপরও দুঃখজনকভাবে বিষয়গুলো ঘটেছে। পুলিশ এসব বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক আছে।
তিনি বলেন, ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। রাজধানীকে ছিনতাইকারীমুক্ত না করা পর্যন্ত এই অভিযান চলবে। এর জন্য আমাদের যা করা লাগে, যতো পরিশ্রম করা লাগে আমরা করবো।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ কনস্টেবলকে হত্যার ঘটনায় আমরা সবাইকে গ্রেফতার করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক রাকিবুল হাসানকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ছুরি, মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। আরেক আসামি নজরদারিতে আছে, তাকেও যে কোনো সময় গ্রেফতার করা হবে।
সাংবাদিক রাকিবুল হাসানের ওপর হামলকারী গ্রেফতার দুইজনের মধ্যে একজন পাঠাও চালক ও আরেকজন ইলেক্ট্রেশিয়ান। তারা নিজেদের পেশার পাশাপাশি ছিনতাইয়ে জড়িত।
পুলিশের ডাটাবেজ অনুযায়ী, ঢাকায় প্রায় ৬ হাজার ছিনতাইকারী আছে, ডাটাবেজে তথ্য থাকলেও ছিনতাইকারীরা কেন বার বার ফিরে আসে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রত্যেকে গ্রেফতার হয়েছে বলেই আমাদের ডাটাবেইজে নাম আছে। আমরা প্রত্যেককে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি। এরপর আদালতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা জামিনে বের হয়ে আসে। এখন আইন সংশোধনের প্রয়োজন আছে কি না বা করণীয় বিষয়ে অপরাধবিজ্ঞানী বা সমাজবিজ্ঞানীরা বলতে পারবেন। আমাদের কাজ গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা।
ছিনতাইকারীরা জামিনে বের হয়ে আবার একই কাজ করছে, এখানে আইনের দূর্বলতা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইনের ফাঁকফোকর আছে কি না অপরাধ বিজ্ঞানীরা বলতে পারবেন, আপনারা এসব বিষয়ে তুলে ধরেন। এ বিষয়ে আমি কোনে্ মন্তব্য করতে পারি না, কারণ আইন অনুযায়ী আমার যে ক্ষমতা দেওয়া আছে আমি তা প্রয়োগ করছি।
ছিনতাইকারীর উৎপাত বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সবাই পুলিশকে দোষারোপ করছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরাতো গ্রেফতার করছি। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে অনেকগুলো স্টেকহোল্ডারের মধ্যে পুলিশ ২০ নাম্বারে। বাকি ১৯টা বাদ দিয়ে ২০ নম্বরেরর পুলিশ ধরে টানাটানি করলে তো হবে না।
চিকিৎসাধীন রাকিবুল হাসানের বিষয়ে জানতে চাইলে পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তার মাথার ২ জায়গায় ইনজুরি, দুই হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে তাকে চিকিৎসা দিচ্ছি। আগামীকাল তার দ্বিতীয় ধাপের অপারেশন হবে। তার সেরে ওঠা শতভাগ না হলেও যতটুকু সম্ভব হয় আমরা সেই চেষ্টা করছি।