দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোবাইল অ্যাপে শেয়ার লেনদেন করতে হলে এখন থেকে অগ্রিম ফি দিতে হবে। ফলে এখন থেকে ব্রোকারেজ হাউজের অন্তর্ভুক্ত গ্রাহকদের সংখ্যা বা অ্যাপ ব্যবহারকারী সংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি তিন মাসের অগ্রিম চার্জ প্রদান করতে হবে। এই অ্যাপে লেনদেন করতে বিনিয়োগকারীদের এক বছরে খরচ করতে হবে ১ হাজার ৫০০ টাকা।
বুধবার (১২ জুলাই) ডিএসই থেকে সকল ব্রোকারেজহাউসে মোবাইল অ্যাপের চার্জের বিষয়ে একটি চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
ট্রেকহোল্ডারের কাছে পাঠানো ডিএসইর চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ডিএসই ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিগুলোকে তাদের অর্ডার পরিচালনা করার জন্য একটি সেন্ট্রালাইজড অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘ডিএসই-ফ্লেক্সটিপি’ প্রদান করছে। ডিএসই মোবাইল অ্যাপ হলো ‘ডিএসই-ফ্লেক্সটিপি’ এর একটি প্ল্যাটফর্ম। যার মাধ্যমে ডিএসইর বিনিয়োগকারীরা ট্রেকহোল্ডারের অনুমতি সাপেক্ষে লেনদেন করতে পারেন। আর বিনিয়োগের সিদ্ধান্তের জন্য তারা রিয়েল-টাইম মার্কেট আপডেট পেয়ে থাকেন। কিন্তু সম্প্রতি ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ডিএসই আগ্রহী ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিগুলোকে মোবাইল অ্যাপ সংযোগ প্রদান করবে। এজন্য প্রতি মাসে সংযোগপ্রতি ভ্যাট এবং ট্যাক্সসহ ১২৫ টাকা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে মোবাইল অ্যাপের সেবা আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে প্রদান করা হবে। একই সঙ্গে আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে বর্তমান মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীদের প্রতি মাসে প্রতিটি সংযোগের জন্য এই নতুন পরিষেবা ধার্য করা হবে।
অপরদিকে, প্রতি ত্রৈমাসিকে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ, এপ্রিল থেকে জুন, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এভাবে চেক বা অনলাইনের মাধ্যমে ডিএসইতে অগ্রিম অর্থ প্রদান করতে হবে। এজন্য ডিএসই ট্রেকহোল্ডারদের কাছে রেজিস্ট্রেশন ফর্মসহ ডিএসই মোবাইল অ্যাপ পরিষেবার নির্দেশিকাগুলোর একটি অনুলিপি পাঠিয়েছে।
এতে বলা হয়, অ্যাপটি ব্যবহার করতে ব্রোকারেজহাউসগুলোকে ডিএসই থেকে সংযোগ নিতে হবে। পাশাপাশি ক্লায়েন্টদের হাউসের অধীনে নিবন্ধন করতে হবে।
সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে ডিএসই-মোবাইলের নিবন্ধিত ব্যবহারকারী ছিল ৪৬ হাজার ৬২২ জন। এটি একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য রিয়েল টাইম শেয়ার লেনদেনের সুযোগ দিয়ে থাকে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ডিএসই-মোবাইল অ্যাপটি ২০১৬ সালে চালু করা হয়। এরপর থেকে বিনিয়োগকারীরা এটি বিনামূল্যে ব্যবহার করতেন। তবে এখন থেকে অ্যাপটিতে লেনদেন করতে বিনিয়োগকারীদের এক বছরে খরচ করতে হবে ১ হাজার ৫০০ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এটির মাধ্যমে ২১ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন করা হয়।
বর্তমানে বেশিরভাগ শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে কম মুনাফা পাচ্ছেন। এমন একটি সময় এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে।
গত বছরের জুলাইয়ের শেষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) শেয়ারে ফ্লোর প্রাইজ দেওয়া শুরু করে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে সূচকের অবাধ পতন রোধ করতে কমিশন এই সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানানো হয়।
তবে কিছু স্টক ব্রোকারেজ হাউস তাদের নিজস্ব অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে, তাই সেই হাউসগুলোর বিনিয়োগকারীদের কোনও চার্জ দিতে হবে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
অর্থসংবাদ/এসএম