১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণকাজ প্রায় ৯৮ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে যান্ত্রিক স্থাপনার কাজ।
টানেলটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলে ৪ লেন দিয়ে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলাচল করতে পারবে। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে এই টানেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এজন্য চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ হারে সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। বাকি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ৩.৪০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টানেলটি নির্মাণে ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই টানেলের নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। এরইমধ্যে নির্মাণকাজ ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। পতেঙ্গা ও আনোয়ারা প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং আনোয়ারা প্রান্তে ৭২৭ মিটার একটি ওভারব্রিজ নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ক্রস প্যাসেজ ও টানেল সম্পর্কিত টোল প্লাজার কাজও প্রায় শেষের দিকে। টানেলের যান্ত্রিক, বৈদ্যুতিক ও সিভিল ওয়ার্ক চলছে।
চীনের সাংহাই শহরের আদলে বন্দরনগর চট্টগ্রাম শহরকে ‘ওয়ান সিটি, টু টাউন’ মডেলে গড়ে তুলতে নগরের পতেঙ্গা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। টানেলটি প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়েকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করবে এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব কমাবে ৪০ কিলোমিটার।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে সিটি আউটার রিং রোড দিয়ে পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলে প্রবেশ করে আনোয়ারা প্রান্তে পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী সড়কের চাতুরী চৌমুহনী পয়েন্টে ওঠা যাবে। ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে এবং এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপিত হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ‘চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু টানেল যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে। এসময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করতে পারেন’।
অর্থসংবাদ/এসএম