প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. নজিবুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এর আগে চার দফায় আমরা ২০০ মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চালু করেছি। এবার পঞ্চম দফায় উদ্বোধন হবে। আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে ষষ্ঠ দফায় আরও ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে আমাদের।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজার সদর ও খুলনার ফুলতলা মডেল মসজিদের সভাকক্ষে উপস্থিত জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মডেল মসজিদ দেশের প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় স্থাপন করতে ২০১৭ সালে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয় সরকার। ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক (২য় সংশোধিত) প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এরই মধ্যে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রথম পর্যায়ে, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ে, ২০২৩ সালের ১৬ মার্চে তৃতীয় পর্যায়ে এবং গত ১৭ এপ্রিল চতুর্থ পর্যায়ে ৫০টি করে মোট ২০০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, প্রতিটি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ৪৩ শতাংশ জমির ওপর তিন ক্যাটাগরিতে নির্মিত হচ্ছে। এরমধ্যে জেলা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে চারতলা, উপজেলা পর্যায়ে তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ-ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা শহর ও ৩টি সিটি করপোরেশনে ৫টিসহ মোট ৬৯টি চারতলা বিশিষ্ঠ মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। বি-ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৯টি (নবগঠিত ৪টি উপজেলাসহ) এবং সি-ক্যাটাগরিতে উপকূলীয় এলাকায় চারতলা বিশিষ্ট (নিচতলা ফাঁকা থাকবে) ১৬টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।
চারতলাবিশিষ্ট প্রতিটি মসজিদে একসঙ্গে এক হাজার ২০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। অন্যদিকে তিনতলাবিশিষ্ট মডেল মসজিদগুলোয় একত্রে ৯০০ জন মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে।
মসজিদগুলোতে নারী ও পুরুষদের জন্য পৃথক অজু ও নামাজ কক্ষ, ইমাম প্রশিক্ষণকেন্দ্র, হেফজখানা, গণশিক্ষা কেন্দ্র, গবেষণাকেন্দ্র, পাঠাগার, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, জানাজার ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন, লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, ই-কর্নার, বিদেশি পর্যটকদের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের থাকার ব্যবস্থাসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
যে জেলা-উপজেলায় উদ্বোধন হচ্ছে মডেল মসজিদ:
গাজীপুরের শ্রীপুর, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ ও হোসেনপুর, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর ও দৌলতপুর, শরীয়তপুরের ডামুড্যা, টাঙ্গাইল সদর, বগুড়ার আদমদিঘী ও সোনাতলা, নওগাঁ জেলা, নওগাঁর রানীনগর ও বদলগাছি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা, নাটোরের সিংড়া, পাবনার সদর উপজেলা, পাবনার বেড়া ও ঈশ্বরদী, রাজশাহীর পুঠিয়া ও দুর্গাপুর, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী, দিনাজপুরের বিরামপুর, লালমনিরহাটের হাতীবান্দা, নেত্রকোণা সদর উপজেলা, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, ময়মনসিংহের ত্রিশাল, বরিশাল সদর, ভোলার দৌলতখান, ঝালকাঠির নলছিটি, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল, চাঁদপুরের হাইমচর ও হাজীগঞ্জ, নোয়াখালী সদর, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ও সদর, কক্সবাজার সদর, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, ফেনীর ছাগলনাইয়া, রাঙ্গামাটির কাউখালী, নানিয়ারচর ও রাজস্থলী, খুলনার ফুলতলা ও পাইকগাছা, মাগুরা জেলা ও সদর উপজেলা, মেহেরপুর সদর, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে।