তাই এই অসুখ সম্পর্ক এমন অনেক তথ্য আমাদের মাঝে ঘুরে বেড়ায়, যার কোনো ভিত্তিই নেই। অনেকেরই ভুল ধারণা আছে যে, ডেঙ্গু মশা শুধু দিনের বেলাতেই কামড়ায়। তবে এ বিষয়টি কতটুকু সত্য, তা হয়তো অনেকেরই অজানা।
এ বিষয়ে ভারতের সাগর দত্ত হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের মেডিসিনের অধ্যাপক ও ইন্ডিয়ান কলেজ অব ফিজিশিয়ানের ডিন ডা. জ্যোতির্ময় পাল এ বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিয়েছেন।
ডা. পাল জানান, ডেঙ্গু রোগের জন্য দায়ী হলো এডিস ইজিপ্টাই মশা। আর সারাদিনের মধ্যে ভোরবেলায় এই মশা বেশি কামড়ায়। তবে মুধু সকালেই নয় বরং দিনের যে কোনো সময়ই এই মশা কামড়াতে পারে। এমনকি রাতেও এই মশা উজ্বল আলোতে কামড়াতে পারে। তাই এখন ডেঙ্গুর মশা নিয়ে ২৪ ঘণ্টাই সচেতন থাকা জরুরি।
ডেঙ্গু রোগ ছড়ায় কীভাবে?
এ বিষয়ে ডা. পাল জানান, এডিস মশা যদি কোনো ডেঙ্গু রোগীকে কামড়ায় সেক্ষেত্রে ওই ভাইরাস নির্দিষ্ট মশার শরীরে প্রবেশ করে। এরপর সেই মশা যখন অন্য কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায় তখন তার শরীরেও ভাইরাস পৌঁছে যায়।
এটিই হলো ডেঙ্গু সংক্রমণের চক্র। তাই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে সব সময় মশারির ভেতরে রাখা উচিত। এতে তার থেকে অন্যদের মধ্যে রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি অনেকটাই কমবে।
আবার ডেঙ্গু মশা কামড়ালেই যে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন, তা কিন্তু নয়। আসলে যাদের শরীরে ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের অবস্থা গুরুতর হয়ে ওঠে।
তাই এ সময় সবারই সঠিক খাদ্যাভাস অনুসরণ করতে হবে। ইমিউনিটি বুস্ট হয় যেসব খাবার সেগুলো নিয়মিত পাতে রাখতে হবে।
কখন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা শুরু করতে হবে?
ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণ হল জ্বর, গায়ে হাত-পায়ে ব্যথা, মাথা ব্যথা ইত্যাদি। তবে অনেকের সমস্যা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যায়। তখন বমি বমি ভাব, একনাগাড়ে বমি হওয়া, প্রস্রাব কম হওয়া, খুব দুর্বলতা, প্রেশার কমে যাওয়া, গায়ে লাল লাগ ফুসকুড়ি, এমনকি রক্তপাতও হতে পারে।
আর এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলেই রোগীকে আর বাড়িতে রাখা যাবে না। বরং যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। তাহলেই রোগীর প্রাণ বাঁচবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় কী?
>> বাড়ির আশাপাশটা পরিষ্কার রাখুন, কোথাও পানি জমতে দেবেন না।
>> বাড়ির আশপাশে পরে থাকা টব, বালতি ও টায়ারে পানি জমতে পারে, তাই পরিত্যক্ত বিভিন্ন জিনিস ফেলে দিন ডাস্টবিনে।
>> মশারি টাঙিয়ে ঘুমান।
>> ফুলহাতা জামা-কাপড় পরুন।
>> মশা থেকে সুরক্ষিত থাকতে মশারোধী ক্রিম ব্যবহার করুন ত্বকে ও ঘরে নিয়মিত অ্যারোসল স্প্রে করুন।