কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন না পেয়ে ডিজিটাল ব্যাংক গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে মোবাইলে ‘আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (এমএফএস)’ নগদ। এ লক্ষ্যে শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন জমা দেবে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’। এই দুটি প্রতিষ্ঠানই মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (এমএফএস) নগদের সঙ্গে সম্পর্কিত।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান।
এ সময় তিনি দেশের সবচেয়ে দ্রুতগতির ‘ইউনিকর্ন’ বা ১০ হাজার কোটি টাকার কোম্পানি হিসেবে নগদের স্বীকৃতি ও ডিজিটাল ব্যাংকের নানা সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।
তানভীর আহমেদ বলেন, ‘এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদের গ্রাহক এখন আট কোটি, যেখানে দিনে এক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। সারা দেশে রয়েছে আড়াই লাখ এজেন্ট বা উদ্যোক্তা পয়েন্ট। নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেলে এ নেটওয়ার্কই হবে তাদের সেবা দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যম।’
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক অনুমোদন নিয়ে এমএফএস হিসেবে সেবা পরিচালনা করছে নগদ। নগদে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের কোনো মালিকানা নেই, তবে ডাক বিভাগের সেবা হিসেবে ব্যবসা করার লাইসেন্স রয়েছে। এ জন্য নগদ থেকে রাজস্ব ভাগ পায় ডাক বিভাগ।
তানভীর আহমেদ বলেন, ‘বেশির ভাগ ছোট ব্যবসায়ীর এক দিন মেয়াদি অর্থ প্রয়োজন। আবার কেউ ৫০-১০০ টাকা জমা করতে চান। এই সেবার মাধ্যমে ছোট ছোট আমানত ও এক অঙ্কের সুদে ঋণ দেওয়া সম্ভব। পাশাপাশি ডিজিটাল ব্যাংকের মাধ্যমে বিমাসেবা বিক্রি করাও সম্ভব হবে, যা দেশের অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি বদলে দেবে।’
ডিজিটাল ব্যাংক হলে প্রবাসী আয়ে কোনো প্রভাব পড়বে কি না, জানতে চাইলে নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘এতে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে এবং প্রবাসী আয়ে তেমন প্রভাব পড়বে না। কারণ, অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে দাম বেশি হলে প্রবাসীরা সেদিকেই থাকবে। বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়াতে ইকোসিস্টেমের পরিবর্তন করা প্রয়োজন।’
তানভীর আহমেদ বলেন, ‘২০২৫ সালের মধ্যে সবাইকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মধ্যে আনতে চায় নগদ। ডিজিটাল ব্যাংক গঠিত হলে তার মাধ্যমে এটা করা সম্ভব হবে।’
নগদ ডিজিটাল ব্যাংক করলে তার মালিকানার কাঠামো কী হবে, সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তানভীর আহমেদ বলেন, ‘ডিজিটাল ব্যাংকের ৫১ শতাংশ মালিকানা থাকবে এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদের কাছে। বাকি মালিকানা থাকবে নগদে বর্তমান উদ্যোক্তা ও নতুনদের কাছে। নগদ ফাইন্যান্সের উদ্যোক্তারাও এতে থাকতে পারেন। পাশাপাশি দেশের কোনো শিল্প গ্রুপও এ উদ্যোগে যুক্ত হতে পারে। তবে কোনো ব্যাংক বা বিমা প্রতিষ্ঠান আমাদের ডিজিটাল ব্যাংকের মালিকানায় থাকছে না।’