আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের বিনিময় হার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সায় উঠেছে, যা এ বাজারের সর্বোচ্চ সীমা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেওয়া হালনাগাদ তথ্য বলছে, বুধবার আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ওই দরে ডলার কেনা বেচা হচ্ছে। এর আগে গত ১৫ জুন আন্তঃব্যাংকে প্রথমবারের মত ডলারের দর ১০৯ টাকায় উঠেছিল।
রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের নতুন দর বেঁধে দেওয়ার পর মঙ্গলবার আন্তঃব্যাংক লেনদেনেও ডলারের সর্বোচ্চ সীমা র্নিধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি।
সে সময় আন্তঃব্যাংকে ডলার কেনাবেচার সর্বোচ্চ সীমা ঠিক হয় ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। বুধবারই সেই সীমা স্পর্শ করল ডলারের দর।
গত সোমবার ডলারের নতুন বিনিময় হার নির্ধারণে বৈঠকে বসে বাফেদা-এবিবি। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে একাধিক দর একটিতে নিয়ে আসতে একাধিক দরের মধ্যে ব্যবধান আরো কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
সে অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে রপ্তানি আয়ে ডলারের বিনিময় হার হয়েছে ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা, যা আগে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা ছিল। আর রেমিটেন্সে ডলারের বিনিময় হার ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয় ১০৯ টাকা।
নতুন সিদ্ধান্তে রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয়ে ডলারের বিনিময় হারের ব্যবধান কমে হয়েছে ৫০ পয়সা।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমদানি পর্যায়ে ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয় রেমিটেন্স ও রপ্তানির বিনিময় হারের ভারিত গড় করে।
এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ গড় হারের সঙ্গে অতিরিক্ত এক টাকা বেশি নিতে পারবে; অর্থাৎ স্প্রেড সীমা হবে এক টাকা।
স্প্রেড সীমা এক টাকা র্নিধারণ করে দেওয়ার পাশাপাশি বাফেদা-এবিবি সিদ্ধান্ত দেয়, আন্তঃব্যাংক লেনদেনে টাকার পরিমাণে তা ১০৯ টাকা ৫০ পয়সার বেশি হবে না।
গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে পরামর্শ করে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে দিচ্ছে সংগঠন দুটি। প্রতিদিন সকালে ডলারের দর সদস্য ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দিচ্ছে বাফেদা।
গত জুলাই মাসে দেওয়া সিদ্ধান্ত না মেনে অনেক ব্যাংক ১০৯ টাকার বেশি দরে ডলার বিক্রি করায় সতর্ক করেছিল বাফেদা-এবিবি। সেই চিঠির সূত্র ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকও বেশি দরে ডলার কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত ১৩ ব্যাংকের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে ।
আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে আনা হলেও এখনো চাপে রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা বাজার। চাহিদা মেটাতে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একশ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করেছে বাণিজ্যক ব্যাংগুলার কাছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে বিক্রি করা হয়েছিল প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার। তার আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, কোন ব্যাংক কী পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা সংরক্ষণ করতে পারবে, তার একটি সীমা (এনওপি-নেট ওপেন পজিশন) নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। আগে ব্যাংকের রেগুলেটরি ক্যাপিটালের ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি মুদ্রা সংরক্ষণ করার সুযোগ ছিল। ডলার বাজারের অস্থিরতা কমাতে ২০২২ সালের ১৫ জুলাই তা কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এই সীমার বেশি ডলার হাতে থাকলে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা অন্য কোনো ব্যাংকের কাছে বিক্রি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ব্যাংকগুলোর।
অর্থসংবাদ/এসএম