এশিয়ায় ছয় মাসের মধ্যে জুলাইয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) চাহিদা বেড়েছে প্রবলভাবে। অন্যদিকে কমেছে ইউরোপের দেশগুলোয়। খবর রয়টার্স।
পণ্যবাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলারের তথ্যমতে, এশিয়ায় জুলাইয়ে জ্বালানিটির আমদানি হয়েছে ২ কোটি ১৮ লাখ ১৫ হাজার টন। যেখানে জুনে আমদানি হয়েছিল ২ কোটি ১২ লাখ ৮০ হাজার টন। জানুয়ারির পর ওই মাসেই সবচেয়ে বেশি এলএনজি আমদানি হয়েছে।
অন্যদিকে, ইউরোপে জুলাইয়ে আমদানি হয় ৮৭ লাখ ২০ হাজার টন এলএনজি, যা জুনে হওয়া ৯০ লাখ ৬০ হাজার টনের তুলনায় কম। গত বছরের আগস্টের পরে এটাই সর্বনিম্ন মাসিক আমদানি।
কেপলারের তথ্যানুযায়ী, জুলাইয়ে এশিয়ায় মোট আমদানি বেড়েছে ৫ লাখ ৭০ হাজার টন, সেখানে ইউরোপে কমেছে ৩ লাখ ৪০ হাজার টন।
উত্তর আফ্রিকায় সরবরাহ করার মতো স্পট এলএনজির পরিমাণ ২৮ জুলাই পর্যন্ত হালকা বেড়েছে। সেখানে প্রতি মেট্রিক মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিটের (এমএমবিটিইউ) দাম দাঁড়িয়েছে ১১ ডলারে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০ দশমিক ৮০ ডলার। সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে স্পট এলএনজির দাম হালকা বেড়েছে, এর আগে গত জুনে এটির দাম ২৬ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ৯ ডলারে নেমেছিল।
তার পরও স্পট দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ থেকে ৮৪ শতাংশ কম। সে সময়ে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ছিল ৭০ দশমিক ৫০ ডলার। গত বছরের আগস্টে ইউরোপে চাহিদা অনেক বেড়ে যায়, এ সময়ে রাশিয়ার পাইপলাইনে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ কমে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালানোর কারণে এমন চিত্র দেখা যায়।
এশিয়ার বড় আমদানিকারকদের মধ্যে চীনের চাহিদা বেশ কমই ছিল। অন্যদিকে, চীন থেকে গত বছর সবচেয়ে বেশি এলএনজি কেনার ইতিহাস গড়েছে জাপান। জুলাইয়ে তারা আমদানি করেছে ৫০ লাখ ৯০ হাজার টন, যা জুনের ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টনের থেকে হালকা বেশি। কিন্তু গত বছরের জুলাইয়ের ৬৭ লাখ ১০ হাজার টনের থেকে অনেক কম।
দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ এলএনজি ক্রেতা। জুলাইয়ে তারা আমদানি করেছে ২৮ লাখ ১০ হাজার টন এলএনজি, যা জুনের ২৯ লাখ ২০ হাজার টন থেকে অল্প একটু কম। অন্যদিকে দামের বিষয়ে সংবেদনশীল ভারতে জুলাইয়ে আমদানি হয়েছে ১৮ লাখ ৪০ হাজার টন। যেখানে জুনে ছিল ১৭ লাখ ৭০ হাজার টন।
এশিয়ার দেশগুলোয় রাশিয়া থেকে এলএনজি আমদানি লক্ষণীয় মাত্রায় কমছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় এ অঞ্চলের ক্রেতারা আমদানিতে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছেন। ফলে আমদানি কমে দুই বছরের সর্বনিম্নে।
চীন এশিয়ার অন্যতম শীর্ষ এলএনজি আমদানিকারক। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশটি রুশ জ্বালানি তেল আমদানির পরিমাণ নজিরবিহীন বাড়িয়েছে। মূলত কম দামের কারণে দেশটি থেকে তুলনামূলক বেশি জ্বালানি তেল আমদানি করছেন চীনের ক্রেতারা। অন্যদিকে, রাশিয়াও পশ্চিমা বাজারগুলোর বিকল্প হিসেবে ভারত ও চীনসহ এশিয়ার দেশগুলোকে বেছে নিয়েছে। জ্বালানি তেল আমদানি বাড়ায় দেশটি থেকে এলএনজি আমদানি কমিয়ে দিয়েছে চীন। বিশেষ করে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় রাশিয়ান প্লান্টগুলো থেকে আমদানি লক্ষণীয় মাত্রায় কমেছে।
অর্থসংবাদ/এসএম