দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চলতি বছরের জুলাই মাসে জুন মাসের তুলনায় পণ্যবাহী আমদানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে ৯ হাজার ৬৩০ টিইইউ। তবে আমদানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বাড়লেও এক মাসের ব্যবধানে ১৫ হাজার ৭৯৯ টিইইউ রপ্তানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কমে গেছে।
ব্যবসায়ী এবং বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পণ্য আমদানিতে এলসি খোলায় কড়াকড়ি কিছুটা কমে আসায় ক্রমাগত বাড়ছে আমদানির পরিমাণ। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিদেশী ক্রেতারা তৈরী পোষাক নেওয়া কমিয়ে দেওয়ায় রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে পণ্যবাহী আমদানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় ১,১৩,৩৮৫ টিইইউ। রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় ৫৯,৫৯২ টিইইউ। জুলাই মাসে খালি আমদানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় ৬৬৬৮ টিইইউ এবং খালি রপ্তানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় ৫৯৩৫২ টিইইউ।
জুন মাসে হ্যান্ডলিং হয়েছিল আমদানি পণ্যবাহী ১০৩৭৫৫ টিইইউ এবং রপ্তানি পণ্যবাহী ৭৫৩৯১ টিইইউ কন্টেইনার। জুন মাসে আমদানি খালি কন্টেইনার ৪৬৬০ টিইইউ এবং রপ্তানি খালি ৪৯৭১১ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই মাসে পণ্যবাহী আমদানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছিলো ১১৩৫৯৭ টিইইউ। পণ্যবাহী রপ্তানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছিলো ৭০১২৪ টিইইউ।
২০২৩ সালের জুলাই মাসে ২০২২ সালের জুলাই মাসের তুলনায় আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কম হয়েছে ২১২ টিইইউ। একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কম হয়েছে ১০,৫৩২ টিইইউ।
চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে কন্টেইনার উঠানামা, পানগাঁও কন্টেইনার টার্মিনাল এবং ঢাকার কমলাপুর আইসিডির (ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো) কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের উপর মোট কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের হিসাব করা হয়। এখানে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ডে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সাইফ মেরিটাইম লিমিটেডের সিওও আব্দুল্লাহ জাহির বলেন, "আমদানি আগের তুলনায় বাড়ছে। ডলার সংকট কাটাতে এলসি খোলার কড়াকড়ি এখন কিছুটা শিথিল হয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে আমদানিতে। গত বছরের জুলাই এবং চলতি বছরের জুলাইয়ে আমাদনি কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ প্রায় সমান।"
তিনি আরো বলেন, "বৈশ্বিক মন্দার কারণে বিদেশী ক্রেতারা এখন বাংলাদেশ থেকে তৈরী পোষাক আমদানি তুলনামূলক কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণে মূলত রপ্তানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এখনো আগের মতো স্বাভাবিক হয়নি।"
প্রসঙ্গত ২০২২ সালে ২০২১ সালের তুলনায় কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কমে যাওয়ায় বৈশ্বিক ১০০ বন্দরের তালিকা থেকে ৩ ধাপ পিছিয়ে যায় চট্টগ্রাম বন্দর। সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া লয়েড'স লিস্টে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ৬তম। তার আগের বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ছিলো ৬৪তম।
অর্থসংবাদ/এসএম