আজ (২৩ সেপ্টেম্বর) লেনদেনের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন শুরুর মাত্র পাঁচ মিনিটেই মূল্য বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা (সার্কিট ব্রেকার) স্পর্শ করেছে ওয়ালটন হাই-টেক পার্ক। এরপরও প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বিজয়ীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। ফলে ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতা সংকটে ছিল ওয়ালটনের শেয়ার। প্রথম দিনে লেনদেন হয় মাত্র ৩৪৮ শেয়ার।
এন ক্যাটাগরির আওতায় লেনদেন শুরু হওয়া ওয়ালটন হাইটেক পার্কের ট্রেডিং কোড ‘waltonhil’ এবং কোম্পানি কোড ১৩২৪৮। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরুর দাম নির্ধারিত ছিল ২৫২ টাকা।
লেনদেনের শুরুতেই ৫০ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমাতে কেউ শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। দিনের সর্বোচ্চ দাম ৩৭৮ টাকা করে ১ কোটি ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ২টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে।
অথচ প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে কোম্পানিটি মাত্র ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩টি সাধারণ শেয়ার ইস্যু করেছে। অর্থাৎ বাজারে কোম্পানিটির যে শেয়ার আছে তার প্রায় চারগুণ বেশি শেয়ার কেনার প্রস্তাব এসেছে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রথম দিনের লেনদেনে।
ওয়ালটন হাই-টেকের শেয়ার কিনতে বড় ধরনের ক্রয় আদেশ আসলেও আইপিও বিজয়ীরা কেউ শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। ফলে ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতা সংকটের মধ্যেই লেনদেন শেষ হয়।
এদিকে ডিএসইর একটি সূত্র জানিয়েছে, ওয়েবসাইটে ১ কোটি ১৫ লাখ শেয়ার কেনার আদেশ দেখালেও আরও ১ কোটির ওপরে শেয়ার কেনার প্রস্তাব রয়েছে। কিন্তু সিস্টেমের কারণে তা দেখানো যাচ্ছে না।
ওয়ালটন হাই-টেক শেয়ার সম্পর্কে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ওয়ালটন ১ শতাংশেরও কম শেয়ার ছেড়েছে। কম শেয়ারের কারণে এ অবস্থা। এছাড়া, যারা আইপিও আবেদন করে ২০টি শেয়ার পেয়েছেন তারাও এ অল্প সংখ্যক শেয়ার বিক্রির চিন্তা করছেন না।
এতো কম শেয়ার ছাড়া উচিত হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী, লেনদেনের প্রথমদিন কোনো কোম্পানির শেয়ার দাম ৫০ শতাংশের ওপরে বাড়তে পারবে না। এ কারণে ওয়ালটনের শেয়ার দাম আজ আর বাড়ার সুযোগ নেই। আগামীকালও কোম্পানিটির শেয়ার দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারবে।
এর আগে গত ২৩ জুন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশন সভায় কোম্পানিটিকে আইপিওতে শেয়ার ছাড়ার অনুমোদন দেয়া হয়।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের ফলে বুক-বিল্ডিং পদ্ধতিতে ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩টি সাধারণ শেয়ার প্রাথমিক পণপ্রস্তাবের মাধ্যমে ইস্যু করছে ওয়ালটন। এর মধ্যে ১৩ লাখ ৭৯ হাজার ৩৬৭টি সাধারণ শেয়ার যোগ্য বিনিয়োগকারীরা বিডিংয়ে তাদের প্রস্তাব করা দামে কিনছেন।
বাকি ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৬টি সাধারণ শেয়ার ২৫২ টাকা মূল্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীর (অনিবাসী বাংলাদেশিসহ) নিকট বিক্রির জন্য আইপিও আবেদন সংগ্রহ করা হয়। ৯ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার পেতে আইপিওতে আবেদন করেন বিনিয়োগকারীরা।
অর্থাৎ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত ছিল ৩৯ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার। এই শেয়ার পেতে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩৭৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার আবেদন পড়ে। এ হিসাবে আইপিওতে আবেদন বেশি পড়ে ৯ দশমিক ৫৯ গুন। যে কারণে আইপিও বিজয়ী নির্ধারণে লটারি করতে হয়।
ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের খরচ মেটাতে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলনের জন্য গত ৭ জানুয়ারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে বিডিংয়ে অংশ নেয়ার অনুমোদন দেয়।
এ অনুমোদনের ফলে কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণে গত ২ মার্চ বিকেল ৫টা থেকে ৫ মার্চ বিকাল ৫টা পর্যন্ত যোগ্য বিনিয়োগকারীরা বিডিংয়ে অংশ নেন। এ সময়ের মধ্যে বিডিংয়ে অংশ নেন ২৩৩ জন। এসব বিনিয়োগকারী সর্বনিম্ন ১২ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৭৬৫ টাকা করে ওয়ালেটনের শেয়ার কেনার জন্য প্রস্তাব দেন।