অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিতে শীর্ষ অঞ্চল এশিয়া। এ অঞ্চলে সবচেয়ে বড় দুই ক্রেতা দেশ ভারত ও চীন। দেশ দুটি রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে সস্তা দামের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে। ফলে জুলাইয়ে এশিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি রেকর্ড স্পর্শ করেছে। খবর রয়টার্স।
জ্বালানি তেলের বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান রেফিনিটিভ অয়েল রিসার্চ জানায়, চলতি বছরের মে মাসে এশিয়ায় দৈনিক ২ কোটি ৭৩ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি হয়, যা ছিল রেকর্ড সর্বোচ্চ। জুনে তা আরো বেড়ে ২ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হয়। তবে জুলাইয়ে আমদানির পরিমাণ ওই রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। এ সময় আমদানি করা হয় দৈনিক ২ কোটি ৭৯ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল।
এশিয়ায় জ্বালানি তেল আমদানি রেকর্ড স্পর্শ করার পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে চীন। রেফিনিটিভের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল আমদানিকারক দেশটি জুলাইয়ে দৈনিক ১ কোটি ২০ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল করে আমদানি করে। এ নিয়ে টানা তৃতীয় মাসের মতো দেশটির দৈনিক আমদানি ১ কোটি ২০ লাখ ব্যারেলের ওপরে অবস্থান করছে।
জুলাইয়ে চীনে সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল সরবরাহ করেছে রাশিয়া। পাইপলাইন ও সমুদ্রপথ মিলিয়ে দেশটি থেকে প্রতিদিন এসেছে ২০ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল, যা জুনে ছিল ২৫ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল।
একসময় সৌদি আরব ছিল চীনের শীর্ষ জ্বালানি তেল সরবরাহকারী দেশ। জুলাইয়ে দেশটি থেকে প্রতিদিন আমদানি করা হয় ১৮ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল, জুনে যা ছিল ১৯ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে রাশিয়া ও সৌদি আরব দুই দেশ থেকে আমদানি কমেছে।
দেশ দুটি থেকে আমদানি কমার পেছনে প্রধান কারণ উত্তোলন কমে যাওয়া। বাজার নিয়ন্ত্রণে ওপেক প্লাসের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে দৈনিক জ্বালানি তেল উত্তোলন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব ও রাশিয়া। পাশাপাশি সৌদি আরব এককভাবেও উত্তোলন কমাচ্ছে। এ কারণে ক্রেতা দেশগুলোয়ও সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব ও রাশিয়া।
এমন বাস্তবতায় অন্য উত্তোলন দেশগুলো থেকে আমদানি বাড়িয়েছে চীন। এর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে অ্যাঙ্গোলা। দক্ষিণ আফ্রিকার দেশটি থেকে জুলাইয়ে আমদানি করা হয়েছে দৈনিক নয় লাখ ব্যারেল। জুনে আমদানির পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল।
এছাড়া ওমান থেকেও আমদানি বাড়িয়েছে চীন। জুনে দেশটি থেকে আমদানি করা হয়েছিল ৭ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল। কিন্তু জুলাইয়ে বেড়ে ৯ লাখ ১০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হয়। এর মধ্য দিয়ে দেশটি চীনের চতুর্থ শীর্ষ সরবরাহকারী দেশে পরিণত হয়।
এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে জুলাইয়ে ভারতের আমদানি বেড়ে পাঁচ মাসের সর্বোচ্চে পৌঁছে। আমদানির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেলে। ভারত এখনো রাশিয়ার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে সস্তা দামে জ্বালানি তেল কিনছে। এর মধ্যে জুলাইয়ে দেশটি থেকে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পরিমাণ জ্বালানি তেল কেনা হয়। দৈনিক আমদানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২০ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেলে।
জুনে জাপান দৈনিক ২১ লাখ ১০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করলেও জুলাইয়ে তা বেড়ে ২৪ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেলে।
অর্থসংবাদ/এসএম