শনিবার (১২ আগস্ট) ১২টার দিকে আইন ও ভূমি ব্যব্যবস্থাপনা বিভাগের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন ভবন হতে এ মানববন্ধন কর্মসূচি আরম্ভ হয়ে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালে পাদদেশে স্থায়ী হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান, আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক সাহিদা আখতার এবং সহকারী অধ্যাপক মো. মেহেদী হাসান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, ইবি ডিবেটিং সোসাইটি, তরুণ কলাম লেখকসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব বৃন্দ ও প্রায় দু’শতাধিক শিক্ষার্থীরা এতে অংশগ্রহণ করে।
এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে, নওরীন ছাদ থেকে পড়লো নাকি ফেলে দেওয়া হলো? আমার বোনকে কেন মরতে হলো, তদন্ত কাজ কোনো গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত না হোক, তদন্ত কাজে বিশ্ববিদ্যালয়কে পাশে চাই, মৃত্যুর তদন্ত দীর্ঘায়িত না হোক, শ্বশুড় বাড়ির নীরব ভূমিকা কী প্রমাণ করে?, নওরীনের শেষ বিদায়ে শ্বশুড়বাড়ির লোক অনুপুস্থিত কেন? লেখা সংবলিত বিভিন্ন প্লাকার্ড দেখা যায়।
অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান বলেন, এমন কি ঘটনা ঘটলো যে মেয়েটি তার বাবা-মা থেকে বিচ্ছিন্ন হলো। একটি ঘরে তালাবদ্ধ থাকতে হলো। এসবই অভিযোগ, প্রমাণ কিন্তু হয়নি। সে ছয় তলায় চলে গেলো এবং ছয় তলা থেকে লাফ দিলো। এগুলো কথিত বা ধারণা। এখনো কিন্তু কেউ বলিনি আমি দেখেছি ছয় তলা থেকে তাকে লাফ দিতে। ঐ বিল্ডিংয়ের গার্ড ও বলিনি আমি তার পড়া দেখেছি বা শুনেছি। এ ঘটনার রহস্য দেশ ও জাতির কাছে উন্মোচিত হওয়া অতীব প্রয়োজন।
সময় সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, এটা কোন স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তার মাস্টার্সে ভর্তি হওয়ার কথা। এ রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন এবং সুষ্ঠু বিচারের প্রত্যাশা করছি।
সহকারী অধ্যাপক সাহিদা আখতার বলেন, মারা যাওয়ার দুইদিন আগে নওরীন আমাকে ফোন করে বলছিল ভর্তির লাস্টডেট ক্যাম্পাসে আসতে পারছে না। একাডেমিক কাজে তার অনুপস্থিতি দেখে তখনও মনে হচ্ছিল সামথিং রং। পরিবারের সাথে কথা বলে যা শুনেছি তা অত্যন্ত ভয়ানক। নওরীনের নিয়মিত ওষুধও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাকে একটা ঘরে বন্দি করে রাখা হতো। সেখানে ইন্টারনেট কানেকশন ছিল না। নিয়মিত তাকে টর্চার করা হতো, ফোন চেক করা হতো এবং কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিত না।
তিনি বিচার দাবিতে আরও বলেন, নওরীনের ফোন পুলিশ সিজ (বাজেয়াপ্ত) করেছে। ফোনে অসংখ্য ডকুমেন্টস পেয়েছে তারা। এটা হত্যা, আত্মহত্যা নাকি আত্মহত্যার প্ররোচনা সেটির তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। আর কোনো নওরীনের যেন এমন পরিণতি না হয়। অতি দ্রুত পেছনে জড়িতদের শাস্তিত আওতায় না আনা হলে প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর উঠবে।
উল্লেখ্য, ০৮ আগস্ট বিকেলে সাভারের আশুলিয়ার পলাশবাড়ী নামাবাজারের পাশে বিজয়নগর রোডে আব্দুর রহিমের মালিকানাধীন বাড়ির ছয় তলা ছাদ থেকে পড়ে এ রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
অর্থসংবাদ/এসএ