পেঁয়াজ রফতানিতে ভারতের শুল্কারোপ, বাংলাদেশে বাড়ছে দাম

পেঁয়াজ রফতানিতে ভারতের শুল্কারোপ, বাংলাদেশে বাড়ছে দাম
দেশে কয়েক মাস ধরেই পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠায় গত জুন থেকে আমদানির অনুমতি দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। এরপর ভারতীয় পেঁয়াজ এলে দাম কিছুটা স্থিতিশীল হয়। তবে নতুন করে পণ্যটি রফতানিতে ৪০ শতাংশ শুল্কারোপ করেছে ভারত। তাতে বাংলাদেশে ফের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়।

অতীতেও পণ্য রফতানিতে প্রতিবেশী দেশটির বিভিন্ন পদক্ষেপ এ দেশের বাজারকে প্রভাবিত করতে দেখা গেছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে পেঁয়াজ রফতানির ন্যূনতম মূল্য ৪০০ থেকে বাড়িয়ে ৮৫০ ডলার করেছিল ভারত। এরপর মাস শেষে পুরোপুরি পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় দেশটি। এতে এক মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশের বাজারে ৫০ টাকা কেজির পেঁয়াজ ২৫০ টাকায় গিয়ে চড়ে।

প্রতি বছরই পেঁয়াজ আমদানি করতে হয় বাংলাদেশকে, যার সিংহভাগই আসে ভারত থেকে। এর মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি করা হয় ৭ লাখ ৪৩ হাজার টন পেঁয়াজ। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি হয় ৬ লাখ ৬৫ হাজার টন। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ লাখ ৫৩ হাজার টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫ লাখ ৭১ হাজার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১০ লাখ ৭ হাজার ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আমদানি করা হয় ৮ লাখ ৬৩ হাজার টন পেঁয়াজ।

বর্তমানে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৮-৩০ লাখ টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ লাখ ৪১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়। এতে উৎপাদন হয় ৩৪ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ। তবে সংগ্রহ থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছতে বিভিন্ন ধাপে পণ্যটির ২৫-৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে উৎপাদনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে পর্যাপ্ত মজুদ থাকার কথা থাকলেও গত এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে অর্থাৎ ভরা মৌসুমেই বাড়তে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে তা প্রায় তিন গুণ হয়। বাজার স্থিতিশীল করতে তাই গত ৫ জুন থেকে কৃষি মন্ত্রণালয় আবার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৫ জুন থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত মোট ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৬৮৪ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি (আইপি) নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে দেশে এসেছে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৮৮৬ টন। অর্থাৎ আইপির বিপরীতে ২৬ শতাংশ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।

এদিকে ভারতের শুল্কারোপের খবরে হিলি স্থলবন্দরে গতকাল সন্ধ্যায় ২-৩ টাকা বাড়িয়ে দেয়া হয় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম। ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ ৪০-৪১ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আর নাসিক জাতের পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৪৬-৪৭ টাকায়। গতকাল এ স্থলবন্দর দিয়ে ৪১টি ট্রাকে ১ হাজার ২০৬ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

তবে ভারতের শুল্কারোপের খবরে পেঁয়াজের সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে রাজধানীর বাজারে। গতকাল সন্ধ্যায়ও কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে পাবনার পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৪০০ টাকা পাল্লা (পাঁচ কেজি), রাতে দাম বাড়িয়ে ৪৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। একইভাবে ৩৫০ টাকা পাল্লার ফরিদপুরের পেঁয়াজ ৩৮০ এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ২৫০ থেকে বাড়িয়ে ২৮০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

অর্থসংবাদ/এমআই

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ