নতুন এই ফাঁদে সবচেয়ে বেশি জড়িয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ। আলোচিত জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার তরিকুল ইসলামের মাধ্যমে নতুন প্রতারণা বিস্তৃতি লাভ করে। জানা যায়, তরিকুল ইসলাম প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়েছেন প্রায় ৫০ কোটি টাকা। রাজশাহী ও ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক তিনি।
পুরো রাজশাহী অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত প্রতারক তরিকুল ইসলামের নেটওয়ার্ক। এই প্রতারক চক্রের সদস্যরা সাধারণ মানুষকে কোটিপতি বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। এমটিএফই’তে এজেন্ট হিসেবে কাজ করা সদস্যরা বলছেন, তরিকুল ইসলামের ডাউনে ৪০জন সিইও কাজ করছেন।
প্রতারণার টাকায় তিনি দেশ-বিদেশে বিলাসী জীবন-যাপন করছেন। খুব গোপনে মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তরিকুল ইসলামের সিন্ডিকেট। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনলাইন ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান এমটিএফই’র মাধ্যমে প্রতারণায় জড়িত প্রায় ৫ শতাধিক ব্যক্তি। যাদের অনেকেই পূর্বে ডেসটিনিতে কাজ করতেন।
ডেসটিনি, যুবক, মধুমতি এনজিও’র ভয়াবহ প্রতারণার পর ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে সম্প্রতি বড় ধরনের প্রতারণা করে পিএলসি আলটিমা নামে একটি বিদেশি অ্যাপ্স। তবে আগের প্রতারণার সব প্রতিষ্ঠানকে ছাড়িয়ে একই কৌশলে প্রতারণা করে চলছে এমটিএফই। অতি মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। সারা দেশে এ প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ। রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নে বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন হাজারো মানুষ। আবার এজেন্ট বা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে কেউ কেউ কোটিপতিও বনে যাচ্ছেন।
যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক ভার্চ্যুয়াল সম্পদ বা মুদ্রার বিনিময়, স্থানান্তর বা ট্রেড নিষিদ্ধ করেছে। নির্দেশনা অমান্য করে কেউ এ ধরনের লেনদেন করলে, তা হবে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৩(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধ করলে হতে পারে ৭ বছরের জেল বা আর্থিক জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। এমটিএফই’তে বিনিয়োগ করেছেন এমন অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এমটিএফই’র অন্তত ২০ জন সিইও মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। যারা সিইও হওয়ার জন্য কমপক্ষে ১০০ জনকে বিনিয়োগ করিয়েছেন। এক এক জন সিইও প্রায় দেড় কোটি টাকা করে বিনিয়োগ দেখাতে পারলে তিনি সিইও হিসেবে কোম্পানিতে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ফলে অনেক অল্প শিক্ষিত মানুষও এমটিএফই’র সিইও পরিচয় দিচ্ছেন।
এদের মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা গায়েব হয়ে গেছে। প্রায় সপ্তাহ থেকে বিনিয়োগ করা অর্থ উত্তোলন করতে পারছে না গ্রাহকরা। অ্যাপসে নিজ অ্যাকাউন্টে ভার্চ্যুয়াল ডলার দেখেই দিন পার করছেন।
অর্থসংবাদ/এমআই