ঘি নিয়ে সমাজে প্রচলিত ৫টি ভুল ধারণা

ঘি নিয়ে সমাজে প্রচলিত ৫টি ভুল ধারণা
সাম্প্রতিক সময়ে ঘি স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশ্বে কিছুটা অপ্রত্যাশিতভাবে কুখ্যাতি অর্জন করেছে। অনেকেই ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে, এটি অস্বাস্থ্যকর এবং এড়িয়ে যাওয়া উচিত। আমরা এই প্রচলিত ধারণা কতটা সত্য এবং আপনার ডায়েটে ঘি অন্তর্ভুক্ত করার অসংখ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানবো।

ধারণা ১: ঘি ওজন বাড়ায়


একটি বহুল প্রচলিত ধারণা হলো, ঘি খেলে ওজন বাড়ে। আমাদের বুঝতে হবে, আমাদের শরীরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্যালোরি থাকলে আমাদের ওজন বাড়ে। ঘিতে ক্যালোরির পরিমাণ বেশি এটা সত্য। তবে ঘি খেলে সরাসরি ওজন বাড়ে এটি একটি ভুল ধারণা।
অনেক পুষ্টিবিদ ডায়েটে তেলের বিকল্প হিসাবে ঘি খেতে বলেন।
ঘিতে রয়েছে মাঝারি-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড। যা সহজে হজমযোগ্য এবং চর্বি হিসাবে সঞ্চিত হওয়ার পরিবর্তে শরীরে শক্তির উৎস হিসাবে ব্যবহৃত হয়। উপরন্তু ঘি বিউটারিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ, একটি শর্ট-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড যা একটি স্বাস্থ্যকর বিপাকে সাহায্য করে এবং একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখে।

ধারণা ২: ঘি ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু ব্যক্তিরা খেতে পারে না


ঘি যেহেতু দুধ থেকেই তৈরি হয় তাই ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট হলে ঘি খাওয়া যাবে না বলে মনে করা হয়। আসলে দুধের যে শক্ত অংশ ল্যাকটোজ ইনটলারেন্টদের সমস্যার কারণ হয় সেটা ঘিয়ে থাকে না। তাই ঘি খেলে কোনো শারীরিক সমস্যাতেও ভুগতে হবে না। ঘি কার্যত ল্যাকটোজ এবং কেসিনমুক্ত। যারা ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু বা দুগ্ধজাত খাবারের প্রতি সংবেদনশীল তাদের জন্য ঘি মাখনের একটি উপযুক্ত বিকল্প খাবার।

ধারণা ৩: উচ্চ রক্তচাপ থাকলে ঘি খাওয়া যাবে না


উচ্চ রক্তচাপযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য ঘি ক্ষতিকারক এই ভুল ধারণাটি সাধারণত এই বিশ্বাস থেকে তৈরি হয়েছে যে সমস্ত চর্বি উচ্চ রক্তচাপের জন্য ক্ষতিকর। ঘি ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি ভালো ভারসাম্য ধারণ করে, যা পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হলে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং রক্তচাপ কমায়। তদুপরি ঘিতে থাকা বুট্রিক অ্যাসিড রক্তনালীগুলিকে শিথিল করতে সাহায্য করতে পারে, স্বাস্থ্যকর রক্তচাপের মাত্রায় অবদান রাখে।

আরও পড়ুন: ফ্রিজে সিদ্ধ ডিম কতদিন পর্যন্ত ভালো থাকে?

ধারনা ৪: ঘি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর


ঘিয়ের একটি অন্যতম উপাদান হল মনোআনস্যাচুরেইটেড ফ্যাটি অ্যাসিড যা একধরনের স্বাস্থ্যকর ভোজ্য চর্বি, যদি পরিমিত মাত্রায় গ্রহণ করা হয়। এজন্য কতটুকু ঘি দৈনিক খাচ্ছেন সেদিকে অবশ্যই কড়া সতর্কতা চাই।

কিছু বিশেষজ্ঞ গবেষণার আলোকে দাবি করেন, যকৃতের ক্যান্সারকে দমিয়ে রাখতে পারে ঘি। যে এনজাইম যকৃতে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানকে সক্রিয় করে সেই এনজাইময়ে উৎপাদন কমিয়ে দিয়ে এই কাজ করে ঘি। ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান শরীর থেকে বের করে দিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে ঘিয়ের, যা পক্ষান্তরে প্রাণঘাতি এই রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনে।

ধারণা ৫: দেশি ঘি-তে রান্না করা বিপজ্জনক


ঘি নিয়ে আরেকটি প্রচলিত মিথ হল যে এটি দিয়ে রান্না করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। সব তেলের একটি স্মোকিং পয়েন্ট থাকে, যে তাপমাত্রায় তা বাষ্পে পরিণত হয়। ঘিয়ের স্মোকিং পয়েন্ট অনেক বেশি, প্রায় ২৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই ঘি সহজে ভেঙে মুক্ত মৌলে পরিণত হয় না। এজন্য ঘি রান্নার ক্ষেত্রে কিছু তেলের তুলনায় নিরাপদ।

অর্থসংবাদ/এমআই

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ভারতে সাড়ে ৭ মাসে সর্বোচ্চ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা
কাজে লাগান পুরনো টুথব্রাশ
খরচ কমাতে বছরের শুরু থেকেই করুন এই ৫ অভ্যাস
শীতে যে ৪ খাবার বাদ দেবেন না
উৎসবে বাজি-পটকা কতটা ক্ষতিকর?
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট, ভারতে ২৪ ঘণ্টায় ৭ মৃত্যু
শীতে কোন সময় গোসল করলে শরীর থাকবে সুস্থ?
গলাব্যথা সারাতে কেন লবণ-পানি পান করবেন
কাঠবাদামের তেল কতটা উপকারী?
সপ্তাহে ১ দিন শ্যাম্পু করলেই দূর হবে খুশকি