সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নিদর্শনা অনুযায়ী, রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ার স্বাভাবিক (সর্বোচ্চ সীমা) নিয়মে ১০ শতাংশ বেড়েছে। ফলে তৃতীয় কার্যদিবসে সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সার্কিট ব্রেকারের সবোর্চ্চ সীমা স্পর্শ করেছে।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বিজয়ীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছেন না বিধায় বিক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার।
বিএসইসির নিদর্শনা অনুযায়ী, লেনদেন শুরুর প্রথম ও দ্বিতীয় দিন ওয়ালটনের শেয়ার ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে সার্কিট ব্রেকার স্পর্শ করে। তারই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় কার্যদিবসেও নিয়ম অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারে ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারবে। সে অনুযায়ী ওয়ালটনের শেয়ার দর ১০ শতাংশ বেড়ে ৬০৯.৫ টাকা দরে লেনদেন হচ্ছে।
এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর লেনদেন শুরুর প্রথম দিন ওয়ালটনের শেয়ার সর্বোচ্চ ৩৭৮ টাকা ও ২৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দিন সর্বোচ্চ ৫৬৭ টাকা দরে লেনদেন হয়।
ডিএসইর লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রোববার লেনদেনের শুরুর দিন প্রথম একজন ক্রেতা ৬০টি শেয়ার ৬০৫ টাকা দরে কেনার জন্য ক্রয় আদেশ দেন। প্রথম পাঁচ মিনিটের মধ্যে ক্রেতারা সর্বোচ্চ ৬০৯.৫ টাকা দরে ওয়ালটনের শেয়ার ক্রয়ের আদেশ দেন। এদিন ৫ মিনিট পর্যন্ত ৬০৯.৫ টাকা দরে বিনিয়োগকারীদের ওয়ালটনের শেয়ার কেনার আদেশ ছিল ১৮ লাখ ৩৫ হাজার ৯২৫ টাকা। কিন্তু বিপরীত দিকে কোনো বিক্রেতা ছিল না। এদিন কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে বিক্রেতা সংকটে পড়ে।
জানা গেছে, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের আইপিও আবেদন গত ৯ আগস্ট শুরু হয়ে ১৬ আগস্ট শেষ হয়। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত ৩৯ কোটি ৩ লাখ টাকার বিপরীতে ৩৭৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার আবেদন জমা পড়ে ওয়ালটনের আইপিওতে। যা ৯ দশমিক ৫৯ গুণ বেশি।
ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে গত ৬ সেপ্টেম্বর ওয়ালটনের শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়। এদিকে ২০ সেপ্টেম্বর লটারিতে বরাদ্দপ্রাপ্ত শেয়ার বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) মাধ্যমে জমা হয়েছে।
গত ২৩ জুন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭২৯তম কমিশন সভায় ওয়ালটনকে আইপিওর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দেয়।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। এর মধ্যে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৬০ কোটি ৯৬ লাখ ৫৭ হাজার ৮০৫ টাকা এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩৯ কোটি ৩ লাখ ৪২ হাজার ১৯৫ টাকা সংগ্রহ করেছে। সংগৃহীত টাকা থেকে ৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যবসা সম্প্রসারণ, ৩৩ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ ও ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা আইপিও পরিচালনা বাবদ ব্যয় করা হবে।
এর আগে গত ২ থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত ওয়ালটনের নিলাম (বিডিং) শেষ হয়। দেশে সর্বপ্রথম ডাচ পদ্ধতিতে বিডিংয়ের মাধ্যমে কোম্পানির শেয়ারের কাট-অব প্রাইস নির্ধারণ করা হয় ৩১৫ টাকা।
আইন অনুসারে, কাট-অব প্রাইসের চেয়ে ১০ শতাংশ কমে অর্থাৎ ২৮৩ টাকা দরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানির শেয়ার ইস্যু করার কথা ছিল। তবে করোনা মহামারি, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা ও দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে কাট-অব প্রাইসের ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ কমে অর্থাৎ ২৫২ টাকা দরে শেয়ার ইস্যু করেছে ওয়ালটন হাই-টেক কর্তৃপক্ষ। ওয়ালটন হাই-টেকের ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছে এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।