প্রকট হতে পারে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক সরবরাহ ঘাটতি

প্রকট হতে পারে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক সরবরাহ ঘাটতি

ওপেক প্লাস লম্বা সময় ধরেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন কমাচ্ছে। সম্প্রতি জোটটি চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সরবরাহ ঘাটতি প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। এমনটা মনে করছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ)। চলতি ও আগামী বছর পণ্যটির চাহিদা অব্যাহত বাড়বে বলেও মনে করছে সংস্থাটি।


জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক। এর সঙ্গে নন-ওপেক কিছু দেশের জোটকে বলা হয় ওপেক প্লাস। জোটটি ২০২২ সাল থেকেই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে উত্তোলন কমাতে শুরু করে। ওপেক প্লাসের গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য সৌদি আরব ও রাশিয়া। জোটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী উত্তোলন কমানোর পাশাপাশি এককভাবেও দেশ দুটি উত্তোলন কমাচ্ছে। আগামী বছরের শেষ পর্যন্ত উভয় দেশ দিনে ১৩ লাখ ব্যারেল করে উত্তোলন কমাবে। এমন সিদ্ধান্তের কারণে চলতি মাসে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলারে উঠে এসেছে, যা এ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।


চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ওপেক প্লাসের সদস্যদেশগুলোর দৈনিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন ২৫ লাখ ব্যারেল করে কমেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলসহ জোটের বাইরের দেশগুলোর উত্তোলন ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা ইরানের উত্তোলনও বাড়ছে। ফলে বৈশ্বিক সরবরাহে কিছুটা ভারসাম্য তৈরি হচ্ছে।


কিন্তু ওপেক প্লাস উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত বহাল রাখায় সেপ্টেম্বর থেকে সামনের মাসগুলোয় বৈশ্বিক সরবরাহে ব্যাপক ঘাটতি তৈরি হবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা।


আইইএ বলছে, ওপেক প্লাসে উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলে আগামী বছরের শুরুতে সরবরাহে উদ্বৃত্ত তৈরি হতে পারে। তবে জ্বালানিটির মজুদ আশঙ্কাজনক হারে নিম্নমুখী হয়ে উঠবে, যা বাজারকে ফের অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেবে।


চলতি বছরের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা পূর্বাভাস বাড়িয়েছে রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক। অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়ে পড়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও আগামী বছরের চাহিদা নিয়ে আশাবাদী জোটটি। কারণ চীন ও ভারত অব্যাহত জ্বালানির ব্যবহার বাড়াচ্ছে।


মাসভিত্তিক এক প্রতিবেদনে ওপেক জানায়, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ২৪ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল করে বাড়তে পারে। আগামী বছর চাহিদা প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে দৈনিক ২২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে।


আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থাও আগামী বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে সংস্থাটির পূর্বাভাসের তুলনায় ওপেক প্লাসের পূর্বাভাস দ্বিগুণ বেশি।


জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার পূর্বাভাস আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। অন্যদিকে ওপেক ও এর মিত্র জোট ওপেক প্লাসের উত্তোলন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তও বাজারকে চাঙ্গা করে তুলছে।


ওপেকের প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, জোটটির আগাম পদক্ষেপ এবং উত্তোলন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত বাজারে স্থিতি ফিরিয়েছে। আগামী বছর পর্যন্ত এ স্থিতিশীল অবস্থা বজায় থাকবে। ২০২৪ সালে চীনের অর্থনীতিতে গতি ফিরবে। ফলে লক্ষণীয় প্রবৃদ্ধি আসবে বিশ্ব অর্থনীতিতেও। বিষয়টি জ্বালানি তেলের ব্যবহার বাড়াতে সহায়তা করবে।


অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া