সুদহার অপরিবর্তিত রাখলো ফেডারেল রিজার্ভ

সুদহার অপরিবর্তিত রাখলো ফেডারেল রিজার্ভ
বৈশ্বিক সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। তাতে মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দিতে একাধিকবার নীতি সুদহার বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ। সম্প্রতি আরেক দফা সুদহার বাড়ানোর গুঞ্জন উঠেছিলো। কিন্তু এবার আর নীতি সুদহার বাড়ায়নি সংস্থাটি। গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকে তারা এ সিদ্ধান্ত নেয়।

তবে সুদহার না বাড়ালেও ফেডের কর্মকর্তারা মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে একধরনের যুদ্ধংদেহী অবস্থান নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ক্রমেই এ বিশ্বাস পোক্ত হচ্ছে যে নীতি সুদহার বৃদ্ধির মাধ্যমেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং তাতে অর্থনীতির বিশেষ ক্ষতি হয় না বা বেকারত্বের হারও তেমন একটা বাড়ে না। খবর রয়টার্সের।

এদিকে ফেডারেল রিজার্ভ যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তাতে অবশ্য বলা হয়েছে, চলতি বছর সুদহার আরও একবার বাড়ানো হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে নীতি সুদহার ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ—এই ব্যাপ্তিতে উন্নীত হতে পারে। এ ছাড়া ২০২৪ সালেও নীতি সুদহার বেশি থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

ফেড মনে করছে, ২০২৬ সাল পর্যন্ত উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলবে। গতকাল দুই দিনের বৈঠক শেষে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মানুষ মূল্যস্ফীতি ঘৃণা করে, ঘৃণা।’ মূল্যস্ফীতির এই দীর্ঘ লড়াইয়ে ভবিষ্যতে সুদহার আবারও বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ফেড।

মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লড়াইয়ে অর্থনীতির ক্ষতি হলেও এবার সে রকম কিছু হচ্ছে না। বরং মার্কিন অর্থনীতি এখন বেশ চাঙা, কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধির হারও ভালো। এ বাস্তবতার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন ফেডের চেয়ারম্যান।

২০২৬ সাল পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির হার বেশি থাকলে তখন পর্যন্ত নীতি সুদহারও বেশি থাকবে। তবে এ সময় পূর্বাভাস অনুসারে ১ দশমিক ৮ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

এমনকি চলতি বছরের বাকি সময় ও পরের বছরগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার কমলেও নীতি সুদহার তেমন একটা কমাবে না ফেড।

আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশীয় পয়েন্ট হারে সুদহার কমানো হতে পারে। সুদহার কমানো হলেও মূল্যস্ফীতির হার যদি বেশি থাকে, তাহলে অর্থের মূল্য কমে যায়।

জেরোম পাওয়েলের ভাষা এখনো অনমনীয় হলেও তাঁর কথায় একটি বিষয় পরিষ্কার। সেটা হলো, মার্কিন অর্থনীতি যে মন্দার কবলে পড়ছে না, সে বিষয়ে তাঁর মধ্যেও একধরনের প্রত্যয় সৃষ্টি হচ্ছে। পাওয়েল বলেছেন, মন্দা এড়ানোর পথ সম্ভবত প্রশস্ত হচ্ছে, তবে এটা এখনো পরিষ্কার নয় যে ফেড লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে। ফেডের নীতি প্রণেতারাও আশা করছেন, জিডিপি বা মোট দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হারও কমে আসবে এবং বেকারত্ব ৪ দশমিক ১ শতাংশের ওপরে যাবে না।

রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার ৫ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসতে পারে; ২০২৫ সালের শেষে যা ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নামতে পারে। চলতি বছরের শেষে মূল্যস্ফীতির হার ৩ দশমিক ৩, আগামী বছর ২ দশমিক ৫ ও ২০২৫ সালের শেষে ২ দশমিক ২ শতাংশে নামতে পারে।

এ ছাড়া ফেড আশা করছে, মূল্যস্ফীতি ২০২৬ সালে ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে চলে আসবে।

অর্থসংবাদ/এমআই

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া