বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসের ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে অক্টোবর মাসে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক। অন্যদিকে ৫ শতাংশ হারে মার্জিন যোগ করতে পারে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। অবশ্য একবার সুদহার কার্যকর করা হলে পরবর্তী ছয় মাসে তা আর পরিবর্তন করা যায় না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার অনুযায়ী, গত ১ জুলাই থেকে সুদহারের নতুন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ব্যাংক ঋণে সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৯ শতাংশ। প্রতি মাসেই স্মার্ট রেট প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর সঙ্গে সাধারণভাবে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৩ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৫ শতাংশ সুদ যোগ করতে পারবে। তবে কৃষি ঋণে স্মার্ট এর সঙ্গে যোগ করা যাবে ২ শতাংশ। এতে করে কৃষি ঋণে সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৯ দশমিক ১৪ শতাংশ। আর সিএমএসএমই, ব্যক্তিগত ও গাড়ি কেনার ঋণে অতিরিক্ত ১ শতাংশ তদারকি বা সুপারভিশন চার্জ নেওয়া যাবে।
সেই হিসেবে, চলতি অক্টোবর মাসে ব্যাংক থেকে বড় অংকের ঋণে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ২০ শতাংশ সুদ নিতে পারবে। অন্যদিকে, সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ হারে মার্জিন যোগ করে ঋণের বিপরীতে সুদ নিতে পারবে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এনবিএফআই। তাদের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১২ দশমিক ২০ শতাংশ এবং আমানতে ৯ দশমিক ২০ শতাংশ। তবে অক্টোবরে ঠিক করা ঋণের এই সুদহার পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তন করা যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদহার প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায়, গত জানুয়ারিতে স্মার্ট ছিল ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এরপর প্রতি মাসে একটু করে বেড়ে গত মে মাসে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ১৩ শতাংশে উঠে। কিন্তু জুন ও জুলাইয়ে সামান্য কমে ৭ দশমিক ১০ শতাংশে নামে। তবে আগস্টে বেড়ে হয় ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ সবশেষ সেপ্টেম্বরে হয়েছে ৭ দশমিক ২০ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে ৯০ দশক থেকে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে বাজারভিত্তিক সুদহার ব্যবস্থা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ৯ শতাংশ সুদহারের সীমা আরোপ করা হয়। মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ডলারের বাজার স্থিতিশীল করতে বিভিন্ন পর্যায় থেকে সীমা তুলে নেওয়ার জন্য বলা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনেও সুদহারের সীমা প্রত্যাহার অথবা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। কিন্তু সরকারের ইতিবাচক সায় না পাওয়ায় নীরব ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত সুদহার বাজারভিত্তিক করা। সেই শর্তের আলোকে নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
অর্থসংবাদ/এমআই