ব্রোকারেজ হাউজের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বিএসইসির নতুন নির্দেশনা

ব্রোকারেজ হাউজের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বিএসইসির নতুন নির্দেশনা
শেয়ারবাজারের সব ব্রোকারেজ হাউজে ‘সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার’ চালুর নির্দেশ দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে সব ব্রোকারেজ হাউজকে ‘সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার’ চালু করতে হবে। লেনদেন ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এই নির্দেশনা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

সোমবার (২ অক্টোবর) বিএসইসি থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে ২০১০ সালের ৩১ জানুয়ারি জারি করা এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রহিত করেছে সংস্থাটি।

বিএসইসির নির্দেশনায় জানানো হয়, কিছু ট্রেকহোল্ডার কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের আর্থিক ও সিকিউরিটিজ লেনদেন সংক্রান্ত তথ্যের জন্য যে ব্যাক অফিস সফটওয়্যারে ব্যবহার করে, তাতে ব্যবহারকারীর দেওয়া তথ্য পরবর্তীতে পরিবর্তন করা বা মুছে ফেলা যায়। এ ধরনের কার্যকালাপের ফলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ হানি হয়েছে এবং শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়েছে। এজন্য চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সংক্রান্ত গাইডলাইন দিয়ে প্যানেলভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে সব ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিকে কমিশনের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ও যে কোনো এক্সচেঞ্জের এ সংক্রান্ত গাইডলাইন পরিপালন করে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে প্যানেলভুক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরবরাহ করা সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিএসইসির নির্দেশনায় আরও বলা হয়, যেসব ব্রোকারেজ হাউজ এরই মধ্যে নিজস্ব উদ্যোগে ব্যাক অফিস সফটওয়্যার তৈরি করে ফেলেছে, সেসব ব্রোকারেজ হাউজকে স্টক এক্সচেঞ্জের তৈরি করা নীতিমালা মেনে ওই সফটওয়্যারের বিপরীতে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে সনদ নিতে হবে। এই সনদ না নিলে কোনো এক্সচেঞ্জের প্যানেলভুক্ত সফটওয়্যার ভেন্ডার থেকে সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার কিনে ও ইনস্টল করে কমিশনের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ও যে কোনো এক্সচেঞ্জের এ সংক্রান্ত গাইডলাইন পরিপালন করতে হবে।

এক্সচেঞ্জ (ডিএসই ও সিএসই) দৈবচয়ন ভিত্তিতে সরেজমিন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের পর ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিগুলোর সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করছে কি না তা নিশ্চিত করবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ট্রেকহোল্ডার কোম্পানি ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে বিদ্যমান সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও অর্থের হিসাব ব্রোকারেজ হাউজ ব্যাক অফিস সফটওয়্যারে রাখে। এতদিন ব্রোকারেজ হাউজ চাইলেই ব্যাক অফিস সফটওয়্যারে হিসাবের তথ্য ডিলিট ও পরিবর্তন করতে পারতো। ফলে বিনিয়োগকারীদের অর্থ ও শেয়ার তসরুপ করা সুযোগ ছিল। তবে সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যারের মাধ্যমে ব্রোকারেজ হাউজ চাইলেই কোনো কিছু পরিবর্তন করতে পারবে না। কারণ এর পাসওয়ার্ড ব্রোকারেজ হাউজের কাছে থাকবে না। মূলত লেনদেন ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেসব ব্রোকারেজ হাউজ সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার চালু করতে ব্যর্থ হবে, তারা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।

সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার চালু নিয়ে ডিএসই, সিএসই এবং সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে কয়েকটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যেসব ব্রোকারেজ হাউজ বিএসইসির নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হবে ডিএসই এবং সিএসই’র ট্রেকহোল্ডার মার্জিন নীতিমালা অনুযায়ী তাদের পাওয়া ফ্রি লিমিট সুবিধা স্থগিত থাকবে। সংশ্লিষ্ট এক্সচেঞ্জের মালিকানা শেয়ারের বিপরীতে প্রাপ্য লভ্যাংশ দেওয়া স্থগিত থাকবে। নির্দেশ পালনে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানগুলোর আইপিও, আরপিও, কিউআইও সুবিধা স্থগিত থাকবে। এছাড়াও এসব প্রতিষ্ঠানের নতুন শাখা অথবা ডিজিটাল বুথ খোলার সুবিধাও স্থগিত থাকবে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত