সকাল সাড়ে ৯টা থেকে লিফলেট বিতরণ ও হ্যান্ডমাইকে প্রচারণা করা হয়। কিন্তু ১০টার পর শব্দহীণ কর্মসূচি শুরু হতেই বেজে ওঠে গাড়ির হর্ন। এ সময় ট্রাফিক পুলিশ কর্তাদের সিগন্যালে রেখে একটি একটি করে গাড়ি ছাড়তে বলতে শোনা যায়। কিন্তু সিগন্যালে থেকেও মন্ত্রীর সামনেই সচিবালয় গেটে বাজতে থাকে গাড়ির হর্ন।
মন্ত্রী বলেন, এখানে কি কোথাও গাড়ি আটকানো হয়েছে? কিন্তু গাড়ি তো আটকানো হয় নাই। তারপরও গাড়ি আটকানো হয়ে থাকলে আমাদের এমন কোনো পরিকল্পনা নেই।
তিনি বলেন, আজ শুধু ঢাকা শহরে এক মিনিট শব্দদূষণমুক্ত কর্মসূচি পালন করলাম। কিছু দিনের মধ্যে দেশব্যাপী এটা করবো। এক ঘণ্টা, পাঁচ ঘণ্টা, ১০ ঘণ্টা করে করার পর একদিন এটিকে ২৪ ঘণ্টায় নিয়ে যাবো। দেশ শব্দদূষণমুক্ত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবো। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের মানুষ শব্দদূষণমুক্ত করতে এগিয়ে আসবে। বিনয়ের সঙ্গে সকলকে অনুরোধ করবো আপনারা বিষয়টি একটু নীরবে চিন্তা করে দেখেন আপনার একটা হর্নের কারণে একজন মানুষের জীবনে যে কোনো ঘটনা ঘটে যেতে পারে, হার্ট অ্যাটাক করতে পারে বা ছোট ছোট বাচ্চারা আক্রান্ত হতে পারে। হাইড্রোলিক হর্ন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, আপনারা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছেন, এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আশাবাদী এই বাংলাদেশকে আমরা একদিন শব্দদূষণমক্ত করতে পারবো। অন্য দেশে যখন যাই আমরা শব্দদূষণ মেনে চলি। কিন্তু নিজের স্বাধীন দেশে এসে আমরা সেটা মানি না। আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করছি।
সারাদেশ এক সময় ২৪ ঘণ্টাই শব্দদূষণমুক্ত থাকবে সেই আশা করে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সারা পৃথিবীর মানুষ মানে কেন আমরা পারবো না? ইনশাআল্লাহ আমরাও পারবো। একটু সচেতন হলে দেশকেও সচেতনমুক্ত রাখতে পারবো।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ জানান, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে এ সংক্রান্ত বিধিমালা হালনাগাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিধিমালা হালনাগাদ করা হবে।
সচিব জানান, বিধিমালা হালনাগাদ করে শব্দের যে মানমাত্র অর্থাৎ অ্যাম্বুলেন্স চলতে হলে কত ডেসিমেলে তারা সড়কে চলতে পারবে, রোগী নেওয়ার সময় চলতে পারবে কিন্তু রোগী ছাড়াও চলতে পারবে কি না- এসব নির্দেশনা দেওয়া হবে। যারা মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন তাদের জন্য আলাদা মানমাত্রা থাকবে। কনসার্ট হবে, পাবলিক প্লেসে জনসমাগম হলে সেখানে শব্দের মানমাত্রার শব্দ ব্যবহার করতে পারবেন তা বলে দেওয়া হবে। শাস্তি, জরিমানা, জেল সবাই থাকবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি, পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্কাউটের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।