রোববার (২২ অক্টোবর) এ বিনিয়োগের উদ্বোধন করা হয়। সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিনিয়োগের তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জাম মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কবিরুল ইজদানী খান, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এরই মধ্যে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ১৫ হাজার জন চাঁদা দিয়েছেন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বেশি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বজনীন পেনশন তহবিল’ শিরোনামের ব্যাংক হিসাবে পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী সবার জমা করা অর্থ জমা থাকবে। এ অর্থ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ নিরাপদ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ উৎসে বিনিয়োগ করবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের ট্রেজারি বন্ডকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
জাতীয় পেনশন স্কিম নিরাপদ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি মনে করি আমাদের বাংলাদেশের মানুষের চাহিদার অনেকটাই মেটাতে পারবে এবং সবাই উপকৃত হবেন।
অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, আমরা এ পর্যন্ত ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। প্রায় ১৫ হাজার জন রেজিস্ট্রেশন করে চাঁদা দিয়েছেন তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বেশি। তার মধ্যে থেকে প্রথমে আমরা বড় অংশ দিয়ে ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করেছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে জমা পড়া চাঁদার টাকা বিনিয়োগের বিধিমালা হচ্ছে। এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। শিগগিরই বিনিয়োগ বিধিমালা জারি করা হবে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকা দিয়ে ১০ বছর মেয়াদি যে ট্রেজারি বন্ড কেনা হয়েছে তার মুনাফার হার ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ। এটা আমাদের প্রত্যাশার থেকেও বেশি।
সংবাদ সম্মেলনে সর্বজনীন পেনশন তহবিলের অর্থে কেনা ট্রেজারি বন্ড আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান ও অর্থমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান।
পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোববার (২২ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত পেনশন স্কিমে ১৪ হাজার ৯২৮ জন চাঁদা জমা দিয়েছেন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা।
এর মধ্যে প্রবাস স্কিমে ৪৪৮ জন অংশগ্রহণকারী এক কোটি ১৫ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং প্রগতি স্কিমে ৬ হাজার ৭১৯ জন ৬ কোটি ৬৬ লাখ ৯ হাজার ৫০০ টাকা জমা দিয়েছেন।
আর সুরক্ষা স্কিমে ৬ হাজার ৭৮ জন ৪ কোটি ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং সমতা স্কিমে ১ হাজার ৬৮৩ জন ৩৭ লাখ ৩৭ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন।
গত ১৭ আগস্ট প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করেন। এর পর পরই আবেদন শুরু হয়ে যায়। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী একজন সুবিধাভোগী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং ৫০ বছরের ঊর্ধ্ব বয়স্ক একজন সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর চাঁদা দিয়ে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন।
পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে পেনশনারের নমিনি পেনশন স্কিম গ্রহণকারীর ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত পেনশন পাবেন।
চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বৎসর চাঁদা দেয়ার আগেই মারা গেলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ তা নমিনিকে ফেরত দেয়া হবে। চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেবল তার জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাবে।
অর্থসংবাদ/এসএম