চলমান বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে উড়ছিল পাকিস্তান। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে কোনোরকম প্রতিরোধই গড়তে পারেনি তারা। তাই জয়ের ধারায় ফিরতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে জ্বলে উঠলেন আবদুল্লাহ শফিক ও বাবর আজম। তাদের দুজনের জোড়া অর্ধশতকে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় ম্যান ইন গ্রিনরা। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিমের অর্ধশতকে ম্যান ইন গ্রিনদের বিপক্ষে ৬ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটের সহজ তুলে নেয় আফগানরা।
পাকিস্তানের দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্যে আফগানিস্তানের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। ম্যাচের শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা। ধীরে ধীরে পাকিস্তান বোলারদের ওপর চড়া হতে থাকেন এই দুই ওপেনার। সেই ধারাবাহিকতায় ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ব্যক্তিগত অর্ধশতকে পূরন করেন ইব্রাহিম জাদরান। ইব্রাহিমের পর ফিফটি হাঁকিয়েছেন আরেক আফগান ওপেনার গুরবাজও।
৩৮ বলে অর্ধশতক তুলে নেন তিনি। অবশ্য ফিফটির ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। আফ্রিদির বলে উসামার তালুবন্দী হওয়ার আগে ৬০ রান করেন এ ব্যাটার। এরপর বাইশ গজে আসেন রহমত শাহ। তার সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়েন ইব্রাহিম। কিন্তু সেঞ্চুরির পথে এগোতে থাকা ইব্রাহিমকে দলীয় ১৯০ রানে সাজঘরে ফিরিয়েছেন হাসান আলী।
পরে উকেতে আসেন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদী। তাকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় ইনিংস এগিয়ে নিতে থাকেন রহমত শাহ। একই সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নেন রহমত। এই দুই ব্যাটারের জুটিতে জয়ে ভিত পেয়ে যায় আফগানরা। শেষ পর্যন্ত রহমত শাহের ৭৭ ও হাশমতউল্লাহর ৪৮ রানে ভর করে ৬ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরের পৌছে যায় আফগানরা। এতে বাবর আজমদের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বিশাল জয় পায় হাশমতউল্লাহর দল। পাকিস্তানের হয়ে বল হয়ে বল হাতে ১টি করে উইকেট নেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলী।
এর আগে চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম উল হক। এই দুই ব্যাটারে ভালো সূচনা পায় ম্যান ইন গ্রিনরা। তাদের জুটিতে ইনিংসের অষ্টম ওভারে দলীয় অর্ধশতকের দেখা পায় বাবরের দল। তবে দলীয় ৫৬ রানে ইমাম আউট হলে ভাঙে এই জুটি। ২২ বলে ১৭ করেন তিনি।
ইমাম ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট করতে আসা অধিনায়ক বাবর আজমকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন শফিক। সেই ধারাবাহিকতায় ব্যক্তিগত অর্ধশতকে পূরন করেন তিনি। চলতি আসরে এটি তার দ্বিতীয় অর্ধশতক। অবশ্য ফিফটির ইনিংস লম্বা করতে পারেননি শফিক। দলীয় ১১০ রানে বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা নুর আহমেদের বলে লেগ বিফরের ফাঁদে পরে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আউট হওয়ার ৫৮ রান করেন তিনি।
এরপর চতুর্থ উইকেটে ব্যাট করতে আসেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে উইকেট থিতু হওয়ার আগেই দলীয় ১২০ রানে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। আউট হবার আগে ১০ বলে ৮ করেন তিনি। পরে বাইশ গজে ব্যাটিংয়ে নামেন সৌদ শাকিল। তাকে সঙ্গে নিয়ে ছোট্ট জুটি গড়েন বাবর আজম। কিন্তু ৪৩ রানের জুটি গড়ে শাকিলও পথ ধরেন প্যাভিলিয়নে। ড্রেসিংরুমে ফিরে যাবার আগে ২৫ রান করেন তিনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়তে থাকা পাকিস্তান।
সেখান থেকে বাবরের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে মেন ইন গ্রিনরা। একই সঙ্গে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩০তম অর্ধ শতক তুলে নেন বাবর। তবে দলকে স্বস্তি দিয়ে নিজেই সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ম্যান ইন গ্রিনদের অধিনায়ক। সাজঘরে যাওয়ার আগে ৭৪ রান করেন এ ব্যাটার।
এরপর ষষ্ট উইকেটে ব্যাট করতে আসেন ইফতেখার আহমেদ। শাদাব খানকে সঙ্গে নিয়ে শেষ দিকে আফগান বোলারদের ওপর তান্ডব চালাতে থাকেন ইফতেখার। শেষ পর্যন্ত শাদাবের ৪০ ও ইফতেখারের ৪০ রানের ক্যামিং ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রানের সংগ্রহ পায় বাবর আজমের দল। আফগানদের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন নূর আহমেদ।