শেষ ম্যাচে তিনশ করেও টাইগারদের পরাজয়

শেষ ম্যাচে তিনশ করেও টাইগারদের পরাজয়
ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানদের হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলেও পুরো আসরে বাংলাদেশ ছিলো কোণঠাসা। পুনের মহারাষ্ট্র স্টেডিয়ামে শেষ ম্যাচে গোটা টুর্নামেন্টের ছবিই যেন দেখা গেল। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৮ উইকেটে হারল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশের করা ৩০৬ রান পুনের বাইশগজে ৩২ বল বাকি রেখেই পেরিয়ে যায় পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

১৩২ বলে ১৭৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মার্শ। তার সঙ্গে মাথা নুইয়ে মাঠ ছাড়া বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের দেখালো দিকহারা। জয় সংখ্যার বিচারে গত বিশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ কাটালো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের দেওয়া ৩০৭ রানের লক্ষ্য নিয়ে কখনোই পেরেশানিতে পড়তে হয়নি অজিদের। পুনের বাইশ গজ ছিল সাড়ে তিনশো তাড়া করেও জেতার মতন পিচ। তাতে ৩০৬ রান নিয়ে লড়াইয়ের বাস্তবতা ছিলো না, হয়ওনি।

তৃতীয় ওভারে ট্রেভিস হেড তাসকিন আহমেদের বলে প্লেইড অন হয়েছেন বটে। তবে তাতে কোন প্রভাব ছিল না ম্যাচের। ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে দারুণ জুটিতে বাকি সময় বাংলাদেশের বোলারদের একদম ধারহীন করে দেন মার্শ।

দ্বিতীয় উইকেটে দুজনের জুটিতে আসে ১২০ রান। ফিফটি করে ওয়ার্নার মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ক্যাচ দিলেও মার্শের চওড়া ব্যাট ছুটতে থাকে অবিচল। স্টিভেন স্মিথকে অ্যাঙ্করিংয়ে রেখে উড়তে থাকেন তিনি। ৮৭ বলে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। পরে আরও হাত খুলে মারা শুরু করেন ডানহাতি ব্যাটার।

খেলা শেষ হওয়ার অনেক আগেই পরিষ্কার হয়ে যায় ম্যাচের ফল। শরীরী ভাষায় নেতিয়ে পড়া বাংলাদেশ বাকিটা সময় বল করে গেছে স্রেফ আনুষ্ঠানিকতার জন্য।

বিশ্বকাপের সমীকরণের হিসেবে শনিবার বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটার গুরুত্ব ছিলো শূন্য। তবে এই অর্থহীন ম্যাচ দেখতেও গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন ১৯ হাজার ৬৪ জন দর্শক।

তাদের বেশিরভাগই ভারতে জার্সি পরা। দুই দলের ভালো মোমেন্টে দিয়েছেন বাহবা। বাংলাদেশের শ'খানেক দর্শকের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার জার্সি পরা ছিলেন অনেকেই। বড় দলের বড় পারফরম্যান্সে উল্লাস করতে দেখা গেছে তাদের।

হেমন্তের মিষ্টি রোদ আর মনোরম হাওয়ায় ক্রিকেট খেলার জন্য ছিল উপযুক্ত পরিবেশ। টস হেরে আগে ব্যাটিং পেলেও উপযুক্ত কাজ করার আগেই বাংলাদেশের হয়ে যায় গড়বড়।

দুই ওপেনার লিটন দাস আর তানজিদ হাসান তামিম এই ম্যাচে ভারতের বিপক্ষেও পেয়েছিলেন ভালো শুরু।

ইতিবাচক মানসিকতায় খেলছিলেন দুজনেই। ৬৯ বলে ৭৬ তোলার পর তাদের জুটি ভাঙে তানজিদের আউটে।

৩৪ বলে ৩৬ রান করে ফেরেন বাঁহাতি তরুণ। পার করেন বেশ সাদামাটা আসর। লিটনের কাছে দলের প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। রয়েসয়ে খেলে দলকে এদিনও ভরসা দিচ্ছিলেন। তবে ম্যাচ অ্যাওয়ার্নেসের ঘাটতি আবারও প্রকট করেছেন তিনি। ঠিক ৩৬ রান করে অ্যাডাম জাম্পার বলে যেভাবে সফট ডিসমিসাল হয়েছেন তাতে তার মাইন্ডফ্রেম নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।

৯ ম্যাচে ২৮৪ রান করে আসর শেষ করলেন লিটন। বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এতে অবশ্য পরিষ্কার গোটা দলের দুর্দশা। মুশফিকুর রহিম স্রেফ এক ইনিংসই ভালো খেলেছিলেন বিশ্বকাপে। শেষ ম্যাচটাও তার গেল বাজে।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এদিনও ছড়াচ্ছিলেন দ্যুতি। টুর্নামেন্টে দলের সেরা ব্যাটার থিতু হয়ে বড় কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। যদিও মারনাশ লাবুশানের দারুণ ফিল্ডিংয়ে ৩২ রানেই রান আউটে থামাতে হয় বিশ্বকাপে তার শেষ ইনিংস।

লাবুশানের দারুণ থ্রোয়ে এর আগে থামতে হয় থিতু হওয়া আরেক ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তকেও। থিতু ব্যাটারদের অসমাপ্ত কাজ একা সমাপ্ত করতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়। ৭৯ বলে ৭৪ রান সংখ্যা বলবে ভালো খেলেছেন তিনি। তবে ম্যাচ পরিস্থিতির দাবি ছিলো আরও বেশি, শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার দক্ষতা দেখাতে পারেননি হৃদয়। যদিও এই ইনিংসের আগে ভুলে যাওয়ার মতনই এক বিশ্বকাপ কাটছিল তার।

শেষ দিকে মেহেদী হাসান মিরাজ টেল এন্ডারদের নিয়ে পার করান তিনশো। ওই পুঁজি নিয়ে ইনিংস বিরতির সময়ই বোঝা যাচ্ছিল ম্যাচের গতিপথ। ভিন্ন কিছু করানোর মতোন অবিশ্বাস্য কোন স্পেল আসেনি বাংলাদেশের বোলারদের কাছ থেকে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

২০২৩ সালে বাংলাদেশের সেরা কারা?
সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েই বছর শেষ করলেন রোনালদো
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সাফল্যের হার ৭১ শতাংশ
ইতিহাস গড়া হলো না বাংলাদেশের
ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশে বাংলাদেশের নাহিদা
বাংলাদেশ ম্যাচে কে এই নারী আম্পায়ার
সুখের মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বেরসিক বৃষ্টির জয়
টাইগারদের আগামী বছরের কর্মসূচিতে নেই অস্ট্রেলিয়া-ইল্যাংন্ড
মাশরাফির দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙলেন সোহান
২০২৬ বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা হতে পারে জানুয়ারিতে