ট্রেজারি বিল থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলো সরকার

ট্রেজারি বিল থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলো সরকার
দেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ব্যয়ে সরকার সাধারণত ব্যাংকগুলো থেকে ধার করে থাকে। সঞ্চয়পত্রের পাশাপাশি ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো থেকে টাকা ধার করা হয়। আবার টাকা ছাপিয়েও ঋণ নিয়ে থাকে সরকার। তবে এতে দেশ মূল্যস্ফীতির পরিমাণ বেড়ে যায় বলে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের দিকে ঝুঁকেছে। রোববার ট্রেজারি বিল থেকে সরকার সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে।

জানা যায়, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য টাকা ছাপিয়ে ঋণ নেওয়া বন্ধ করেছে সরকার। এদিকে সঞ্চয়পত্রেও সাড়া মিলছে না। ফলে ট্রেজারি বিলের প্রতি ঝুঁকছে সরকার। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের নিলামে বিভিন্ন মেয়াদি বিলের সুদহার ১০ দশমিক ২০ শতাংশ থেকে ১০ দশমিক ৬০ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। তাতে সরকারকে ১০ শতাংশের বেশি সুদে ঋণ নিতে হয়েছে।

এদিকে ট্রেজারি বিলের ওপর নির্ভর করে ব্যাংকঋণের সুদহার নির্ধারণ হচ্ছে। ফলে আগামী মাসে ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার আরও বাড়বে। যে পদ্ধতিতে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, সেটাকে বলা হয় স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি নভেম্বর মাসের জন্য স্মার্ট রেট হচ্ছে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এর সঙ্গে ব্যাংকগুলো সাড়ে ৩ শতাংশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সাড়ে ৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিতে পারে।

জানা গেছে, গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত নিলামে ৯১ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ছিল ১০ দশমিক ২০ শতাংশ, যা ১৩ নভেম্বর ছিল ১০ শতাংশ। ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ, আগের নিলামে এই হার ছিল ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। আর ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৬০ শতাংশ, যা আগের নিলামে ছিল ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, ট্রেজারি বিলের সুদহার ১২ শতাংশ পর্যন্ত উঠতে পারে। এতে ঋণের সুদহারও বাড়বে।

জানা গেছে, ১৩ নভেম্বর সরকার ৯১ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে ৩ হাজার ৩০ কোটি টাকা, ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে ৬৪৭ কোটি টাকা ও ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে ৭৮২ কোটি টাকা তোলে। এ ছাড়া ১৫ নভেম্বর ১০ দশমিক ৯৯ শতাংশ সুদে ৫ বছর মেয়াদি বন্ডের মাধ্যমে ৮১৬ কোটি টাকা নিয়েছে।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য নীতি সুদহার বা রেপো রেট একবারে দশমিক ৭৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়ানো হয়। ফলে নীতি সুদহার বা রেপো রেট বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। ৫ অক্টোবর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রয়েছে। এর পর থেকে সব ধরনের সুদের হার বাড়তে শুরু করে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে, দেশে গত অক্টোবর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ, যা ১১ বছর ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও কিছুটা বেড়ে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ হয়েছে।

অর্থসংবাদ/এমআই

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ