দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষ ও নৈতিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৩’ উপলক্ষে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে শিল্পকলা একাডেমিতে দুদক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দুদক তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব কোনো অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে নির্মোহ ও নিষ্ঠার সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে পালনের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারলেই আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালন সার্থক হবে।
তিনি বলেন, জনগণ আশা করে দুর্নীতি দমন কার্যক্রমে কমিশনের সব পর্যায়ের কর্মচারীরা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতা প্রদর্শন করবেন।
সংবিধিবদ্ধ স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনগণের কাছে দুদকের জবাবদিহি থাকা উচিত বলেও মনে করেন রাষ্ট্রপতি।
দুদককে একটি আধুনিক, পেশাদার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, আপনার বা আপনাদের কোনো ভুল পদক্ষেপে যেন কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশ-জনগণের সেবায় সর্বাত্মক প্রয়াস অব্যাহত রাখুন। দুদককে জনগণের নির্ভরতা ও আস্থার স্থলে পরিণত করতে হবে।
সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন দুর্নীতিবাজের পরিচয় কেবলই দুর্নীতিবাজ। দুর্নীতিবাজদের কোনো দল নেই, নীতি-আদর্শ নেই। তাই দুর্নীতিবাজরা যে দলেরই হোক, দুর্নীতি করলে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনতে হলে দুদককে আরও কৌশলী, প্রশিক্ষিত ও প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ার পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, দুর্নীতি শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা এবং পৃথিবীর কোনো দেশই এর কুপ্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নয়। দুর্নীতি সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করে, অর্থনৈতিক বিকাশ ও উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, দুর্নীতি দমন করতে হলে পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে. . . পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষা এবং ধর্মীয় অনুভূতিও দুর্নীতি রোধে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বব্যাপী প্রতিরোধ গড়ে তোলারও আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের সফলতায় আনন্দিত হই, আবার ব্যর্থতায় ব্যথিত হই।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক, মোছা. আছিয়া খাতুন ও কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।