চলতি মুদ্রানীতিতে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, ব্যাংকের সুদহারে ছয়-নয় নীতি তুলে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি সুদহার বাজারভিত্তিক করতে সিক্স মান্থস মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল বা স্মার্ট পদ্ধতি চালু করা হয়। তাতে ট্রেজারি বিলের উপর ভিত্তি করে ছয় মাস পর পর সুদহার পরিবর্তন হচ্ছে।
এদিকে স্মার্ট পদ্ধতি চালু করায় আমানতের সুদহার তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে ব্যাংকগুলো তাদের ইচ্ছেমতো আমানতে সুদহার দিতে পারবে। মূলত ফিক্সড সুদহার পরিবর্তন এবং বাড়তি সুদ প্রাপ্তিতে ব্যাংকের আমানতে টাকার পরিমাণ বাড়েতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে ব্যাংকের বাইরে মানুষের হাতে থাকা টাকার পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮২৯ কোটি। পরের মাস জুনে ব্যাংকের বাইরে টাকার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৯১ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসেই ব্যাংকের বাইরে চলে যায় ৩৬ হাজার ৮৪ কোটি টাকা।
মানুষ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার পর যা আর জমা হয়নি, তা-ই ব্যাংকের বাইরে রাখা টাকা হিসেবে পরিচিত। এই টাকা মানুষ নিজের কাছে বা কোনো সমিতিতে রাখেন। এভাবে টাকা মালিকের নিজের হাতে কিংবা এক হাত থেকে অন্য হাতে ঘুরেছে, ব্যাংকে ফেরেনি। অর্থাৎ গত জুন মাসে ব্যাংকে না ফেরা টাকার পরিমাণ ছিলো ২ লাখ ৯১ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা।
তবে সুদহার বাড়ানোর ফলে জুলাই মাসে ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ কমে আসতে শুরু করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, গত জুলাই মাসে ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ কমে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকায় নেমে আসে। তা আগস্টে আরও কমে হয় ২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ নেমে আসে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০৫ কোটিতে, যা অক্টোবরে আরও কমে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকায় নামে।
হিসাব অনুযায়ী, গত চার মাসে ব্যাংকের বাইরে থাকা মোট নগদ টাকা থেকে প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা আমানত হিসেবে ব্যাংকে ফিরেছে। ফলে ব্যাংক খাতের আমানতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, মে মাসে ব্যাংকগুলোয় আমানতের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা। আর গত অক্টোবরে তা ১৬ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
অর্থসংবাদ/আজাদ