বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্প পার্ক বা শিল্পনগরীতে সুষ্ঠুভাবে কারখানা স্থাপনে প্লট বরাদ্দ এবং ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন নীতিমালা হয়েছে। সম্প্রতি নীতিমালাটি গেজেট আকারে প্রকাশ হয়।
এর নাম দেওয়া হয়েছে- ‘বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্পনগরী/শিল্পপার্কে প্লট বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৩’
এ নীতিমালায় বিসিকের প্লট বরাদ্দ প্রক্রিয়া, প্লট পেতে শর্ত ও যোগ্যতা, প্লটের মূল্য পরিশোধ পদ্ধতি, শিল্প পার্কে কারখানা স্থাপন, প্লট বরাদ্দ বাতিল, বরাদ্দ বাতিল হওয়া প্লট পুনরায় পেতে আপিল পদ্ধতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন বিসিকের প্লটগুলো নিয়ে নানা সমস্যার সমাধান হবে।
নতুন নীতিমালা জারির পর, গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে এর আগে জারি করা ‘বিসিক শিল্পনগরীতে প্লট বরাদ্দের নীতিমালা-২০১০’, চামড়া শিল্পনগরীর ‘ভূমি বরাদ্দের নীতিমালা’, ‘এপিআই শিল্পপার্কর প্লট বরাদ্দ নীতিমালা’, ‘বিসিক জামদানি শিল্পনগরী, তারাব, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের প্লট বরাদ্দ নীতিমালা-২০১৬’, ‘বিসিক শিল্পনগরী, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহে প্লট বরাদ্দের নীতিমালা’সহ প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত সব নীতিমালা এবং প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত সব সমঝোতা স্মারক বাতিল বলে গণ্য হবে।
নীতিমালায় একজন ইজারাদার কীভাবে প্লটের জন্য আবেদন করবেন তা থেকে শুরু করে স্থাপনা নির্মাণের সময়কাল, প্লট হস্তান্তর, ভাড়া দেওয়ার নিয়ম, বরাদ্দ বাতিলসহ সবকিছু দিকনির্দেশনা রয়েছে। প্লট বরাদ্দ পাওয়া যাবে ৯৯ বছরের জন্য।
শিল্প প্লটের মূল্য পরিশোধে নীতিমালায় কিস্তি সুবিধার কথা বলা রয়েছে। বলা হয়েছে, প্লটের মূল্যের ২০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট হিসেবে আবেদন পত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। বাকি টাকা প্লটের দখল বুঝে নেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে এককালীন অথবা বরাদ্দপত্র জারির এক বছর পর হতে ছয় বছরে ১২টি সমান কিস্তিতে পরিশোধ করা যাবে।
নারী শিল্পোদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ডাউন পেমেন্ট হবে ১৫ শতাংশ। এবং কিস্তির সংখ্যা হবে সাত বছরে ১৪ টি।
কিস্তিতে পরিশোধের ক্ষেত্রে প্লটের সম্পূর্ণ মূল্য সুদসহ হিসেব করে ডাউন পেমেন্ট ও কিস্তি নির্ধারণ করতে হবে। এককালীন মূল্য পরিশোধ করলে কোনো সুদ প্রদান করতে হবে না।
প্রকল্প মেয়াদ শেষ হওয়ার ন্যূনতম ছয়মাস আগে ইজারা গ্রহীতা বা উদ্যোক্তা সাময়িকভাবে নির্ধারিত প্লটের মূল্য সম্পূর্ণ পরিশোধ করলে চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত মোট মূল্যের ১.৫ শতাংশ রিবেট প্রদান করতে হবে। নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে এ হার হবে ২ শতাংশ।
ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের জন্য নির্মিত স্থাপনার ভাড়া ও ফ্লোরস্পেস নির্ধারণ করা হয়েছে নীতিমালায়। প্লট ক্রয়ের আর্থিক সক্ষমতা নেই এমন আগ্রহী সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাদের জন্য বিসিক এক বা একাধিক প্লটে শেড নির্মাণ করে ফ্লোরস্পেস ভাড়া বা বিক্রি করতে পারবে। এক্ষেত্রে নির্মাণ খরচ সংশ্লিষ্ট শিল্পনগরী, শিল্পপার্কের প্রকল্পের অর্থ থেকে নির্বাহ করতে হবে।
এছাড়া বিসিক শিল্পনগরী বা শিল্প পার্কে প্লট বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা জন্য আবেদনপত্র বাছাই করতে সভাপতি, সদস্য সচিব ও তিনজন সদস্য নিয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করতে হবে। বিভিন্ন জেলায়, বিশেষায়িত এবং পার্বত্য এলাকায় প্লট বরাদ্দ, ব্যবস্থাপনা কমিটি ও কার্যপরিধি সংক্রান্ত আলাদা কমিটি থাকতে হবে।
কোনো ইজারা গ্রহীতা এ নীতিমালা অনুসরণে ব্যর্থ হলে, বিসিক সংশ্লিষ্ট শিল্প প্লটের বরাদ্দ বাতিল করে তা দখল করার আগে পুনরায় বরাদ্দ দিতে পারবে। এছাড়া ইজারা গ্রহীতা চুক্তি ভঙ্গ করলে উপযুক্ত আদালতে বিসিক মামলা করতে পারবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।