২০২৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ১০ শতাংশ

২০২৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ১০ শতাংশ

চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দম কমেছে ১০ শতাংশ। দুই বছরের মধ্যে এবারই প্রথম নিম্নমুখী প্রবণতায় বছর শেষ করতে যাচ্ছে জ্বালানি তেলের বাজার। ভূরাজনৈতিক সংকট, উত্তোলন হ্রাস ও মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর কঠোর নীতির কারণে বছরজুড়ে জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে। এসব সংকট না থাকলে দাম আরো কমে যেত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


শনি ও রোববার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারে গতকালই ছিল জ্বালানি তেলের চলতি বছরের শেষ কার্যদিবস। জ্বালানি তেলের বার্ষিক গড় দাম নিম্নমুখী হলেও দৈনিক হিসেবে গতকাল বাজারে দাম বেড়েছে পণ্যটির।


এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ৩৩ সেন্ট বা দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। ব্যারেলপ্রতি মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৭ ডলার ৪৮ সেন্টে।


অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম বেড়েছে ২০ সেন্ট বা দশমিক ৩ শতাংশ। প্রতি ব্যারেলের মূল্য উঠেছে ৭১ দশমিক ৯৭ সেন্টে।


আগের দিন অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ৩ শতাংশ কমেছিল। লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে এমন খবরে ওইদিন জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা কমে আসে।


ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ফিলিস্তিনের সমর্থনে লোহিত সাগরে চলাচলকারী ইসরায়েলি জাহাজে অব্যাহত আক্রমণ চালিয়ে আসছে। এতে অধিকাংশ জাহাজ কোম্পানি আতঙ্কিত হয়ে লোহিত সাগর এড়িয়ে চলাচল করতে শুরু করেছিল।


এদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের গড় দাম উভয় বাজার আদর্শেই ২০২০ সালের পরে সর্বনিম্নে নেমেছে। ওই বছর করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট স্থবিরতায় জ্বালানি তেলের চাহিদা কমায় ব্যাপক দরপতন ঘটেছিল।


চলতি বছর উত্তোলন কমিয়ে মূল্যবৃদ্ধির প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে ওপেক প্লাস জোট। এমনকি ২০২৩ সালের সর্বোচ্চ দামের তুলনায় জ্বালানি তেলের মূল্য প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে।


জ্বালানি তেলের বছরের শেষ সপ্তাহের অবস্থা অবশ্য বৈশ্বিক শেয়ারের বার্ষিক দামের বিপরীতে ছিল। ৪৭টি দেশের শেয়ার তথ্য সমন্বয় করা এমএসসিআই ইকুইটি সূচক ২০২৩ সালের শুরুর অবস্থা থেকে শেষ সপ্তাহে ২০ শতাংশ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ বৃদ্ধি ও নতুন বছরে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) সুদহার কমাতে পারে, এমন খবর এ প্রবৃদ্ধিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।


এদিকে টানা দুই বছর অব্যাহত বাড়ার পর এ বছর কারেন্সি মার্কেটে ডলারের অবমূল্যায়ন ঘটেছে। ২০২৩ সালে ২ শতাংশ পতনের পথে মুদ্রাটি। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৪ সালে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে প্রত্যাশিত নিম্ন সুদহার ও ডলারের বিনিময়মূল্য কম থাকলে বিক্রি বাড়তে পারে। বাজারপ্রবণতা অনুযায়ী, ডলারের অবনমন ঘটলে ভিন্ন মুদ্রার গ্রাহকের জন্য জ্বালানি ক্রয় খরচ কমে আসে। এতে ডলারে লেনদেন হওয়া পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়।


রয়টার্সের এক সমীক্ষায় অংশ নেয়া ৩০ অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকের প্রত্যাশা, আগামী বছর প্রতি ব্যারেল ব্রেন্টের গড় দাম হতে পারে ৮৪ ডলার ৪৩ সেন্ট। আর চলতি বছরের গড় দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারের আশপাশে থাকতে পারে, যা ২০২২ সালের ব্যারেলপ্রতি গড়ে ১০০ ডলার দরের চেয়ে যথেষ্ট কম। গত বছর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপক বেড়েছিল।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পোশাকখাতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে, কমে গেছে চাহিদা
২০২৩ সালে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ
২০২৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ১০ শতাংশ
ইভ্যালিতে বড় অফার আজ, ১০ টাকায় মিলবে পাঞ্জাবি
হিলিতে আদা-সবজিতে স্বস্তি, বাড়তি দামে রসুন
বাংলাদেশে বিনিয়োগের ঐক্যমতে শেষ হলো গ্লোবাল বিজনেস কনফারেন্স
১১ মাসে ৪৩ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি
২০২৪ সালে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর
আইসিএবির নতুন সভাপতি ফোরকান উদ্দীণ
বিসিক শিল্পনগরীতে এক হাজার ৯৮ প্লট খালি