এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের পুঁজিবাজারের সূচক প্রায় স্থবির হয়ে আছে। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। সূচকের পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে পুঁজিবাজারে লেনদেনের পরিমাণ কমছে। তবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের ডিসেম্বরে পুঁজিবাজারের দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ। ইবিএল সিকিউরিটিজের মাসিক পুঁজিবাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত এক বছরের বাজার পর্যালোচনা সূত্রে, এ বছরের ডিসেম্বরে ডিএসইতে দৈনিক গড়ে ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। আর গত বছরের ডিসেম্বরে লেনদেন হয়েছিলো ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার বা ৪০ শতাংশ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছর দেশের পুঁজিবাজারে ২৪৪ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এতে ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। গড়ে লেনদেন হয় ৫৭৮ কোটি ১১ লাখ টাকা। তবে একক দিন হিসাবে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় ১ হাজার ২৫৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
গত বছরের ডিসেম্বরে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ২০৭ পয়েন্ট। এ বছরের ডিসেম্বরে সূচকটির অবস্থান দাঁড়ায় ৬ হাজার ২৪৬ পয়েন্টে।
ইবিএল সিকিউরিটিজের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দৈনিক গড়ে ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। এর পরের মাসে এ লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারে। গত ফেব্রুয়ারিতে এটি কমে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৩০ লাখ ডলারে। এ বছরের মার্চে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর পরের মাসে এটি কিছুটা বেড়ে ৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার হয়। গত মে মাসে দৈনিক গড়ে ৮ কোটি ২০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। যা ২০২৩ বছরে মাসের হিসাবে সর্বোচ্চ মাসিক লেনদেন।
এ বছরের জুনে লেনদেন কমে দাঁড়ায় ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। জুলাইয়ে এটি আরো কমে ৭ কোটি ২০ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। আগস্টে দৈনিক গড় লেনদেন ৪ কোটি ডলারে নেমে আসে। গত সেপ্টেম্বরে এটি কিছুটা বেড়ে ৫ কোটি ৭০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছিল। অক্টোবরে ৪ কোটি ২০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের কারণে একশ্রেণীর বিনিয়োগকারীর মধ্যে কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। এতে বাজারে কিছুটা বিনিয়োগ বেড়েছে, যে কারণে লেনদেনও বেড়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বাজার পরিস্থিতি ভালো হবে এবং আরও বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা করছেন তারা।
এদিকে চলতি বছরের শেষ সপ্তাহে ডিএসই সূচক ও লেনদেন উভয়ই কমেছে। তবে বাজার মূলধন বেড়েছে। সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ০ দশমিক ০৪ শতাংশ বা ২ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট কমেছে। সপ্তাহ শেষে সূচকটি ৬ হাজার ২৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ০ দশমিক ০৪ শতাংশ বা ০ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৯৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ০ দশমিক ১০ শতাংশ বা ১ দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া মোট ৪০৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৬টির, কমেছে ৮৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২১১টির। এছাড়া লেনদেন হয়নি ২৫টির।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের চার কার্যদিবসে ২ হাজার ১৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৯২৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন কমেছে ৯১১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বা ৩১ দশমিক ১৩ শতাংশ।
অর্থসংবাদ/এসএম
 
                         
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                