প্রতিবেদনে কোভিডের কারণে পড়াশোনা বন্ধ হওয়া, শিক্ষার্থী, বাবা-মা ও শিক্ষকদের জন্য দূরবর্তী শিক্ষাসহায়তা, স্কুল পুনরায় খোলার পরিকল্পনা, স্বাস্থ্যবিষয়ক বিধিনিষেধ এবং অর্থায়নসহ জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার ওপর কোভিডের প্রভাবের বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে। জুন থেকে অক্টোবরের মধ্যবর্তী সময়ে প্রায় ১৫০টি দেশে জরিপ পরিচালনা করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
প্রতিবেদন বিষয়ে ইউনিসেফের শিক্ষা কার্যক্রমের প্রধান রবার্ট জেন কিন্স এক প্রেস বার্তায় উল্লেখ করেন, বিশ্ব জুড়ে শিশুদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে মহামারি যে বিপর্যয় ঘটিয়েছে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে তার ব্যাপকতা অনেক বেশি। এসব দেশে দূরশিক্ষণের সীমিত সুযোগ, অর্থায়ন কমে যাওয়ার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি এবং পুনরায় স্কুল খোলার ব্যাপারে বিলম্বিত পরিকল্পনা স্কুলগামী শিশুদের জন্য স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগকে ব্যাহত করেছে। এ অবস্থায় স্কুলগুলো পুনরায় চালু করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং শিশুদের পড়াশোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাড়তি ক্লাস নেওয়া জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির প্রকোপ শুরুর পর এ পর্যন্ত দরিদ্রতম দেশের শিশুরা গড়ে তাদের শিক্ষাজীবনের প্রায় চার মাস হারিয়েছে। যেখানে উচ্চ-আয়ের দেশগুলোর শিশুরা হারিয়েছে ছয় সপ্তাহ। ৭৯টি দেশের মধ্যে নিম্ন এবং নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর প্রায় ৪০ শতাংশ ইতিমধ্যে তাদের শিক্ষা বাজেট কমিয়েছে। চলতি বা আগামী অর্থবছরে তাদের দেশের শিক্ষা বাজেট কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে। নিম্ন-আয়ের দেশগুলোর প্রায় অর্ধেক হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পদক্ষেপ, পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী না থাকার কথা জানিয়েছে। উচ্চ-আয়ের দেশগুলোর ৫ শতাংশ এগুলো না থাকার কথা জানিয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছে, উচ্চ এবং উচ্চ-মধ্যম-আয়ের দেশগুলোর ৯০ শতাংশের বেশি দেশে স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে শিক্ষকদের দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রেখেছিল, যেখানে নিম্ন-আয়ের ৪০ শতাংশেরও কম দেশ এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল। প্রতি ১০টি দেশের মধ্যে ৯টি দেশই অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ তৈরিতে সহায়তা দিয়েছিল। তবে এই সুবিধার আওতা ছিল খুবই কম।