এশিয়ার চালের বাজারে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা

এশিয়ার চালের বাজারে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা
সর্বশেষ সপ্তাহে অন্যতম শীর্ষ রফতানিকারক দেশ ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে চালের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। এর পেছনে সরবরাহ কমে আসা ও বাড়তি রফতানি চাহিদাকে চিহ্নিত করেছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তবে এ সময় শীর্ষ রফতানিকারক ভারতে খাদ্যপণ্যটির দাম কমে এসেছে। মূলত রফতানিতে শ্লথতার কারণে ভারতের বাজারে এ সময় চালের দাম কমতির দিকে ছিল। খবর বিজনেস রেকর্ডার ও রয়টার্স।

ভিয়েতনাম বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ। সর্বশেষ সপ্তাহে দেশটিতে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চাল টনপ্রতি ৪৯৫ ডলারে বিক্রি হয়েছে। এর আগের সপ্তাহেও খাদ্যপণ্যটি টনপ্রতি ৪৮৫ ডলারে বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভিয়েতনামের বাজারে রফতানিযোগ্য চালের দাম টনে ১০ ডলার বেড়েছে।

দেশটির রফতানিকারকরা বলছেন, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে ভিয়েতনামে চালের সরবরাহ অনেকটাই কমে এসেছে। এর প্রভাব পড়েছে খাদ্যপণ্যটির দামে। বাড়তে শুরু করেছে রফতানিযোগ্য চালের দাম।

করোনা মহামারীর মধ্যে চলতি বছর ভিয়েতনাম থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে চাল রফতানিতে রীতিমতো ধস নেমেছে। এ খবরও দেশটিতে খাদ্যপণ্যটির দাম কমাতে পারেনি। দেশটির জেনারেল স্ট্যাটিস্টিকস অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে (জানুয়ারি-অক্টোবর) ভিয়েতনাম থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৫২ লাখ ৯০ হাজার টন চাল রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ কম। গত সপ্তাহে এ তথ্য প্রকাশিত হলেও ভিয়েতনামের বাজারে কমেনি রফতানিযোগ্য চালের দাম।

এ ধারাবাহিকতায় চলতি বছর শেষে ভিয়েতনাম থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে চাল রফতানি আগের বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস। রফতানি হতে পারে ৬৪ লাখ টন চাল। গত বছর দেশটি থেকে সব মিলিয়ে ৬৭ লাখ টন চাল রফতানি হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি।

অনেকটা একই চিত্র বজায় রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল রফতানিকারক দেশ থাইল্যান্ডে। সর্বশেষ সপ্তাহে দেশটিতে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চাল টনপ্রতি ৪৫২-৪৮০ ডলারের মধ্যে বিক্রি হয়েছে। এর আগের সপ্তাহেও দেশটিতে খাদ্যপণ্যটি টনপ্রতি ৪৩৫-৪৪০ ডলারের মধ্যে বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে থাইল্যান্ডের বাজারে রফতানিযোগ্য চালের দাম টনে সর্বোচ্চ ৪০ ডলার বেড়েছে।

ব্যাংককভিত্তিক রফতানিকারকরা জানান, করোনাকালে থাইল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। দেশটি থেকে খাদ্যপণ্যটির রফতানিও রয়েছে বাড়তির পথে। নতুন করে কয়েকটি দেশের সঙ্গে রফতানি চুক্তি সই হয়েছে। সব মিলিয়ে থাই চালের চাহিদায় বিদ্যমান চাঙ্গা ভাব দেশটিতে খাদ্যপণ্যটির মূল্যবৃদ্ধিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।

এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে ভারতে। রফতানিতে শ্লথতা দেশটির বাজারে খাদ্যপণ্যটির দাম কমিয়ে দিয়েছে। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল রফতানিকারক দেশ। সর্বশেষ সপ্তাহে দেশটিতে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চাল টনপ্রতি ৩৭০-৩৭৫ ডলারের মধ্যে বিক্রি হয়েছে। এর আগের সপ্তাহেও দেশটিতে খাদ্যপণ্যটি টনপ্রতি ৩৭২-৩৭৭ ডলারের মধ্যে বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভারতের বাজারে রফতানিযোগ্য চালের দাম টনে ২ ডলার কমেছে।

অন্ধ্র প্রদেশের রফতানিকারকরা জানান, ভারতের বাজারে চালের দামে বিদ্যমান মন্দা ভাব দিন দিন জোরালো হচ্ছে। ভারতীয় রফতানিকারকরা আশা করেছিলেন, বাংলাদেশের বাজারে খাদ্যপণ্যটির রফতানি বাড়ানো যাবে। কিন্তু বাস্তবে এমন ঘটনা ঘটেনি। বরং অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানতে বাংলাদেশ সরকার আমদানির পরিবর্তে কৃষক পর্যায় থেকে ধান-চালের সংগ্রহ বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগ ভারতীয় চাল রফতানিকারকদের হতাশ করেছে। খাদ্যপণ্যটির দরপতনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।

ইউএসডিএর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২০ সালে ভারত থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ১ কোটি ১০ লাখ টন চাল রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে খাদ্যপণ্যটির রফতানি বাড়তে পারে ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। গত বছর ভারত থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমে মোট ১ কোটি ১ লাখ টন চাল রফতানি হয়েছে। ২০১৪ সালে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ১ কোটি ২২ লাখ ৩৮ হাজার টন চাল রফতানির রেকর্ড হয়েছিল।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পোশাকখাতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে, কমে গেছে চাহিদা
২০২৩ সালে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ
২০২৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ১০ শতাংশ
ইভ্যালিতে বড় অফার আজ, ১০ টাকায় মিলবে পাঞ্জাবি
হিলিতে আদা-সবজিতে স্বস্তি, বাড়তি দামে রসুন
বাংলাদেশে বিনিয়োগের ঐক্যমতে শেষ হলো গ্লোবাল বিজনেস কনফারেন্স
১১ মাসে ৪৩ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি
২০২৪ সালে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর
আইসিএবির নতুন সভাপতি ফোরকান উদ্দীণ
বিসিক শিল্পনগরীতে এক হাজার ৯৮ প্লট খালি