তিনি বলেন, বৈশ্বিক পুষ্টির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ সঠিক পথ ধরে এগিয়ে চলেছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণের কঠোর পরিশ্রম এবং অপুষ্টি দূরীকরণে অর্জিত সাফল্য ইতোমধ্যে বিশ্ব সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। শিল্পমন্ত্রী আজ বিশ্ব খাদ্য সমৃদ্ধকরণ সম্মেলনের (Global Summit on Food Fortificaion) অংশ হিসেবে আয়োজিত ‘সংকটকালে টিকে থাকতে সক্ষম খাদ্য ব্যবস্থা- খাদ্য সমৃদ্ধকরণের ভূমিকা (A Resilient Food System for a time of Crisis-the Role of Fortification) শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের ভার্চুয়াল সভায় বক্তৃতাকালে একথা বলেন। গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রেশন (GAIN) এবং মাইক্রো নিউট্রেন্ট ফোরাম যৌথভাবে এ অধিবেশনের আয়োজন করে।
ইউএসএআইডি'র (USAID) প্রধান পুষ্টি বিশেষজ্ঞ সন বেকারের (Shawn Baker) সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইন্দোনেশিয়ার উন্নয়ন পরিকল্পনামন্ত্রী ড. সুহারসো মনোয়ারফা (Dr Suharso Monoarfa), নাইজেরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. ওসাগেই ইহানায়ার (Dr Osagie Ehanire), মোজাম্বিকের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী কার্লোস মেসকুইটা (Carlos Mesquita), গাম্বিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহামেদু লামিন সামাতে (Ahmadou Lamin Samayeh), আফ্রিকান ইউনিয়নের গ্রামীণ অর্থনীতি ও কৃষি উন্নয়ন বিষয়ক কমিশনার জোসেফা লিওনের করিয়া সেকো (Josefa Leonel Correa Sacko) এবং ভারতের বিহার রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী ড. প্রেম কুমার (Dr Prem Kumar) ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বক্তব্য রাখেন।
করোনা মহামারীর প্রভাবে বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবন-জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র মানুষের জীবিকায় করোনার ভয়াবহ প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার নিম্নআয়ের মানুষকে নগদ আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি সুলভ মূল্যে খাদ্য বিতরণসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করেছে। এর পাশাপাশি অদৃশ্য ক্ষুধা (Hidden hunger) মোকাবেলায় বিপুল পরিমাণে খাদ্যে ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, অপুষ্টি দূরীকরণে বাংলাদেশ ধারাবাহিক প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। এ লক্ষ্যে ২০১৩ সালে ভোজ্যতেলে ভিটামিন 'এ' সমৃদ্ধকরণ বাধ্যতামূলক করে আইন পাস, আয়োডিন ঘাটতি পূরণে মন্ত্রিপরিষদ আয়োডিনযুক্ত লবণ আইন ২০২০ ( Iodized Salt Act 2020) অনুমোদন এবং জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি ২০২০ ( National Food and Nutrition Security Policy/NFNSP 2020)-তে খাদ্য সমৃদ্ধকরণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়ও এটি অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাংলাদেশ সরকার গৃহীত এসব উদ্যোগের ফলে বর্তমানে দেশের মোট প্যাকেটজাত ভোজ্য তেলের ৯৫ শতাংশ এবং ড্রামজাত ভোজ্য তেলের ৪১ শতাংশ ভিটামিন 'এ' সমৃদ্ধকরণের আওতায় এসেছে। বর্তমান সরকার গম ও ভুট্টার আটায় ভিটামিন- 'এ' সমৃদ্ধ করার কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পুষ্টিমান পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি ঘটবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
জনাব হুমায়ুন আরও বলেন, পুষ্টি ঘাটতি দূরীকরণে সরকার বায়ো-ফর্টিফাইড ক্রপস বা জৈবসমৃদ্ধ ফসলের (Bio-fortified crops) উৎপাদন বাড়াতে আগ্রহী। জিংকসমৃদ্ধ চাল মানবদেহে জিংক ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সরকার এ চালের উৎপাদন ও ভোগ বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণের পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নয়নে শিল্প মন্ত্রণালয়, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রেশন (GAIN), অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং বেসরকারিখাত একযোগে কাজ করছে বলে তিনি জানান।