প্লাজমা-শোধনের সময় কোনো সমস্যা না হলেও বিকেলের দিকে সৌমিত্রের হৃদস্পন্দন আচমকা অনিয়মিত হয়ে পড়ে এবং কিছুক্ষণের জন্য শারীরিক অবস্থা বেশ অস্থির হয়ে যায়।
ওইদিন রাতে সৌমিত্রের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক অরিন্দম কর জানিয়েছিলেন, শারীরিক অস্থিরতা দ্রুত সামলে নেয়া হয়। কিন্তু শুক্রবার তার অবস্থার অবনতি হয়ে পড়ে আরও। বর্ষীয়ান অভিনেতার চেতনাস্তর পাঁচে নেমে গেছে।
সাধারণত এই চেতনাস্তর তিন পর্যন্ত নেমে গেলেই চিকিৎসকরা ব্রেন ডেথ হিসেবে মেনে নেন। কয়েকদিন আগেও সৌমিত্রের চেতনাস্তর ৯ থেকে ১০-এর মধ্যে ছিল।
সৌমিত্রের হৃৎস্পন্দনও স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি বলে জানানো হয়েছে হাসপাতাল থেকে। তার কিডনির অবস্থা নিয়েও আশঙ্কায় চিকিৎসকরা। এমনকী, চিকিৎসকদের দিনরাত পরিশ্রমেও ফল মিলছে না তেমন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবারও ফের জ্বর এসেছিল অভিনেতার। চিকিৎসকরা মনে করছেন, কোনো সংক্রমণের জন্য নয় বরং বারংবার রক্ত দেয়ার জেরেই অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডি প্রতিক্রিয়ায় এই জ্বর আসছে তার।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, আজ দ্বিতীয় দফায় প্লাজমাফেরেসিস হবে সৌমিত্রের। কোভিড রিলেটেড এনসেফালোপ্যাথি সামলানোর জন্যই অভিনেতার প্লাজমা-শোধন করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। আশা করা হচ্ছিল, এতে আচ্ছন্নভাব ধীরে ধীরে কাটতে পারে সৌমিত্রের।
কারণ চিকিৎসকরা সন্দেহ করছিলেন, তার রক্তে এমন কোনো দূষিত ও বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে, যা ডায়ালাইসিস করে ছেঁকে বের করা যায়নি বলেই তার জেরে মস্তিষ্ক স্বাভাবিক কাজ করছে না। কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছু হল না বরং আচ্ছন্নভাব আরও বাড়ল।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সৌমিত্র। চিকিৎসা চলাকালীন তার শারীরিক অবস্থার উত্থান-পতন লেগেই ছিল।
করোনায় গত কয়েক মাস শুটিং বন্ধ ছিল টলিউডে। নিয়মবিধি মেনে সম্প্রতি সৌমিত্র শুটিং শুরু করেছিলেন। কাজ করছিলেন তার ওপর তৈরি একটি তথ্যচিত্রে। এর মধ্যেই তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েন। পরে পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসে।
এর আগেও টলিউডে থাবা বসিয়েছে করোনা। মা হওয়ার পরই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কোয়েল মল্লিক, তার স্বামী নিসপাল সিংহ, বাবা রঞ্জিত মল্লিক ও মা দীপা মল্লিক। আক্রান্ত হন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী।
অর্থসংবাদ/ এমএস