বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে চায় চীন: শি জিনপিং

বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে চায় চীন: শি জিনপিং

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় অব্যাহত ভাবে সহযোগিতা করে যাবে। বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে চাই আমরা। আজ বুধবার স্থানীয় সময় বিকেলে বেইজিংয়ের ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’এ সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে চীনের এ আগ্রহের কথা জানান শি জিনপিং।


পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।


চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায়, উন্নয়ন অগ্রগতিতে চীন অব্যাহত ভাবে সহযোগিতা করে যাবে। বাংলাদেশকে অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, কম সুদে ঋণ এবং বাণিজ্যিক ঋণ; এই চার ক্ষেত্রে চীন সহযোগিতা করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।


এ বিষয়ে দুই দেশের টেকনিক্যাল কমিটি যৌথ ভাবে কাজ করবে। শীঘ্রই চীন থেকে টেকনিক্যাল কমিটি বাংলাদেশে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়।


গত কয়েক দশকে চীনের অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই উন্নয়ন আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।


পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ বিভিন্ন আইকনিক স্থাপনা নির্মাণ, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য চীনের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ দেন শেখ হাসিনা। চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৮০০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে সেখানে, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং আইটি কলেজগুলোতে চীনের উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তারা বাংলাদেশ থেকে আরও পণ্য আমদানি করবেন।


আমসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির বিষয়ে আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেন শি জিনপিং।


আগামী বছর বাংলাদেশ ও চীনের কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি। এটিকে সামনে রেখে দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ক, বিদ্যমান গভীর সম্পর্ককে দ্বিতীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন শি জিনপিং।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীরতর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। চীনের প্রেসিডেন্ট দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়, জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ বাড়ানোর কথাও বলেন।


আওয়ামী লীগ ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীরতর করার ওপর গুরুত্বারোপ করে শি জিনপিং বলেন, সুশাসনের জন্য ভালো দল দরকার। রোহিঙ্গা ইস্যুটি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তোলার আগেই শি জিনপিং এ বিষয়ে কথা বলেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।


রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি জানি বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন বাংলাদেশকে সর্বত সহায়তা করবে।


মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে শি জিনপিং বলেন, মিয়ানমার সরকার এবং প্রয়োজনে আরাকান আর্মির সঙ্গেও তারা যোগাযোগ করে এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে চীন। ওয়ান চায়না নীতির পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থানের প্রশংসা করেন শি জিনপিং।


শি জিনপিং বলেন, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চীন হস্তক্ষেপ করে না। আমরাও চাই না কারো অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করুক।


আন্তর্জাতিক ফোরামে চীন ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে জানিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আন্তর্জাতিক ফোরামে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো এবং বিশ্ব শান্তি এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ এবং চীন একসঙ্গে কাজ করবে।


ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান।


কাফি

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার ৭ প্রস্তাব
জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা
এনসিপিকে শাপলার বিকল্প প্রতীক নিতে চিঠি দেবে ইসি
শর্ত পূরণ করেছে এনসিপিসহ দুটি দল: ইসি
স্ত্রীসহ সাবেক এমপি আলী আজমের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
ফ্যাসিস্ট শক্তি মোকাবিলা করা বড় চ্যালেঞ্জ: আইজিপি
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আজ
দূষিত বায়ুর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়
আজ বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
বাংলাদেশে হিন্দুবিদ্বেষী কোনো সহিংসতা নেই: প্রধান উপদেষ্টা