আশুরার মর্মবাণী ধারণ করে সমাজে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

আশুরার মর্মবাণী ধারণ করে সমাজে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র আশুরার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে সমাজে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পবিত্র আশুরা বিশ্বের মুসলিম উম্মার কাছে অত্যন্ত শোকাবহ, তাৎপর্যপূর্ণ ও মহিমান্বিত একটি দিন। হিজরি ৬১ সালের ১০ মহরম ষড়যন্ত্রকারী ও বর্বর ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে ইসলামের শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) সপরিবারে মর্মান্তিকভাবে শাহাদত বরণ করেছিলেন।


তিনি বলেন, ইসলামের ইতিহাসে এই মর্মন্তুদ বিয়োগাত্মক ঘটনা ছাড়াও হিজরি সালের মহরম মাসের ১০ তারিখ নানা কারণে ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ। শোকাবহ অথচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই দিনে তিনি দেশের সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানসহ বিশ্বের মুসলিম উম্মার প্রতি তার আন্তরিক শুভকামনা জানান এবং অশুভ শক্তি থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রার্থনা করেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তির ধর্ম ইসলাম সবসময় সম্প্রীতির বাণী প্রচার করে। মহানবী (সা.) তার বিদায় হজের ভাষণে বলেছিলেন, ‘হে লোক সকল, আল্লাহ্ বলেছেন-হে মানবজাতি, আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পারো, নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সেই সর্বাধিক সম্মানিত যে সর্বাধিক পরহেজগার। (সুরা ৪৯, হুজুরাত, আয়াত ১৩)।”


তিনি বলেন, আমিরে মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর তার পুত্র ইয়াজিদ অবৈধভাবে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র ও শক্তি প্রয়োগের পথ বেছে নিয়েছিল। চক্রান্তের অংশ হিসেবে মহানবী হজরত মুহম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হাসান (রা.) কে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করেছিল।


তিনি আরো বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ হয়ে পরিবার-পরিজন ও ৭২ জন সঙ্গীসহ মহানবী (সা.) এর আরেক দৌহিত্র হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) পবিত্র আশুরার দিন শাহাদতবরণ করেছিলেন। এমন নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকা- ইতিহাসে বিরল। অসহায় নারী ও শিশুদের পানি পর্যন্ত পান করতে দেয়নি ইয়াজিদ বাহিনী। বিষাক্ত তীরের আঘাতে নিজের কোলে থাকা শিশুপুত্রের মৃত্যুর পর আহতাবস্থায় অসীম সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করে শহীদ হয়েছিলেন হজরত ইমাম হুসাইন (রা.)। কারবালার যুদ্ধে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.)’র আপসহীন অবস্থান ও ত্যাগের শিক্ষা কালে কালে মানবজাতিকে পৃথিবী থেকে জুলুম, অন্যায় ও অবিচার দূর করতে শক্তি ও সাহস যোগাবে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) পবিত্র আশুরার দিনে রোজা রাখা সম্পর্কে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। এই দিনে তিনি নিজে রোজা রাখতেন এবং সাহাবিদের রোজা রাখার পরামর্শ দিতেন। মহান আল্লাহ এই দিনে সমস্ত পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন।


তিনি বলেন, আদি মানব হজরত আদম (আ.) এই দিনে পৃথিবীতে আগমন করেছেন, এই দিনই তার তওবা কবুল করা হয়েছিল এবং এ দিনে তিনি স্ত্রী হাওয়া (আ.) এর সঙ্গে আরাফার ময়দানে সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন। হজরত নুহ (আ.) এর নৌকা মহাপ্লাবন থেকে রক্ষা পেয়েছিল।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, পবিত্র আশুরার দিনে অনেক নবী, রাসুল ও আল্লাহ’র প্রিয় বান্দারা তার নৈকট্য ও সাহায্য লাভ করে কঠিন বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি লাভ করেছেন। সে হিসেবে, আমি বিশ্বাস করি, এ দিনে বিশেষ নেক আমল মানব জাতির জন্য অনেক কল্যাণ বয়ে আনবে।


তিনি আরো বলেন, আসুন আমরা যে যার অবস্থান থেকে কল্যাণকর কাজে অংশ নিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ ‘সোনার বাংলাদেশ’ এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে নিবেদিত হই।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার ৭ প্রস্তাব
জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা
এনসিপিকে শাপলার বিকল্প প্রতীক নিতে চিঠি দেবে ইসি
শর্ত পূরণ করেছে এনসিপিসহ দুটি দল: ইসি
স্ত্রীসহ সাবেক এমপি আলী আজমের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
ফ্যাসিস্ট শক্তি মোকাবিলা করা বড় চ্যালেঞ্জ: আইজিপি
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আজ
দূষিত বায়ুর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়
আজ বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
বাংলাদেশে হিন্দুবিদ্বেষী কোনো সহিংসতা নেই: প্রধান উপদেষ্টা