শেয়ারবাজারের ৩৬ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছাড়াল ১ লাখ কোটি টাকা

শেয়ারবাজারের ৩৬ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছাড়াল ১ লাখ কোটি টাকা

২০২৪ সালের জুন প্রান্তিক শেষে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ এক লাখ ৩ হাজার ৭৫৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবেচেয়ে বেশি খেলাপি ন্যাশনাল ব্যাংকের। ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২০ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির মোট বিতরণ করা ঋণের ৪৯ শতাংশ।


তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে এরপরের তালিকায় রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত রুপালী ব্যাংক। ব্যাংকটি খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার ৪৬৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। যা ব্যাংকটির বিতরণ করা মোট ঋণের ২৩ দশমিক ০১ শতাংশ। খেলাপির শীর্ষ এ তালিকার তৃতীয় স্থান দখল করেছে বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংক। ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা। যা ব্যাংকটির মোটি বিতরণ করা ঋণের ৩০ দশমিক ৯৫ শতাংশ।


বিগত সরকারের আমলে দেশের ব্যাংক খাতে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। এতদিন ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমাতে নানা সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরেও গত জুন শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে সর্বকালের সর্বোচ্চ ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিংখাতে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ বা ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।


চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিলো ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে জুন প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। আর এসময় ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর গত জুন পর্যন্ত সময়ে বিতরণ করা ঋণের ১ লাখ ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৩২ দশমিক ৭৭ শতাংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি হয়ে পড়েছে ৯৯ হাজার ৯২১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ৩ হাজার ২২৯ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো বিতরণ করা ঋণের মধ্যে ৫ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা বা ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।


ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, সুশাসন ও খেলাপি ঋণই বর্তমান ব্যাংকিং খাতের বড় সমস্যা। ব্যাংক খাতে সুশাসন না থাকার কারণে দিনদিন খেলাপি বাড়ছে। এ সমস্যা মোকাবিলায় ঢালাওভাবে ছাড় না দিয়ে পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।


আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণও ধাপে ধাপে কমিয়ে আনাতে হবে। আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতে খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের নিচে এবং সরকারি ব্যাংকে ১০ শতাংশের নিচে নামাতে হবে। কিন্তু বর্তমানে বেসরকারি খাতের খেলাপি ঋণ ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর সরকারি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ৩২ দশমিক ৭৭ শতাংশই খেলাপি।


কাফি

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ইবনে সিনা ফার্মার লভ্যাংশ ঘোষণা
নগদ লভ্যাংশ পাঠিয়েছে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স
তিন ব্যাংকের ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন
ব্লকে ৬১ কোটি টাকার লেনদেন
জিকিউ বলপেনের সর্বোচ্চ দরপতন
দর বৃদ্ধির শীর্ষে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
লেনদেনের শীর্ষে সোনালী পেপার
সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় লেনদেন ৬৯৬ কোটি টাকা
চারদিনের ছুটিতে ব্যাংক ও পুঁজিবাজার
দুই কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন