এলএনজি টার্মিনাল চুক্তি বাতিল, সরকারের পুনর্বিবেচনার অনুরোধ সামিটের

এলএনজি টার্মিনাল চুক্তি বাতিল, সরকারের পুনর্বিবেচনার অনুরোধ সামিটের

সামিটের সঙ্গে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রূপান্তরের দ্বিতীয় টার্মিনাল (এফএসআরইউ) নির্মাণ চুক্তি বাতিল করেছে সরকার। সম্প্রতি সামিট গ্রুপ চুক্তি বাতিলের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। জ্বালানি নিয়ে কাজ করা সংস্থা এনার্জি ইন্টেলের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।


গত ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) কক্সবাজারের মহেশখালীতে সামিট গ্রুপের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রূপান্তরের দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মাণ চুক্তি বাতিল করে। সামিটকে পাঠানো পেট্রোবাংলার এ-সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, চুক্তির কিছু শর্ত ভঙ্গের দায়ে এমন ব্যবস্থা নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এর মধ্যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পারফরম্যান্স গ্যারান্টির টাকা জমা না দেওয়ার বিষয়ও আছে।


তবে সামিট গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সামিট এলএনজি টার্মিনাল-২ কোম্পানি (এসএলএনজি-২) বলেছে, তারা কক্সবাজারের মহেশখালীতে এফএসআরইউ প্রকল্পের জন্য পেট্রোবাংলার সঙ্গে চুক্তিতে উল্লিখিত কোনো শর্ত ভঙ্গ করেনি। গোষ্ঠীটি বলেছে, এই শর্তগুলো চুক্তি সম্পাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এগুলো সন্তোষজনক ছিল।


গত ৭ অক্টোবর সামিট এলএনজি টার্মিনাল-২ কোম্পানিকে পেট্রোবাংলার জানিয়েছিল, ২৮ জুনের মধ্যে এই প্রকল্পসংক্রান্ত ‘পারফরম্যান্স বন্ড’ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সামিট সেই বন্ড জমা না দেওয়ায় প্রকল্পটি বন্ধ করা হয়েছে। চুক্তির প্রতিশ্রুতিগুলো যেন আর্থিকভাবে পূরণ করা হয় তা নিশ্চিত করার জন্য ‘পারফরম্যান্স বন্ড’ নেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে।


তবে সামিট গ্রুপ দাবি করেছে, ২৮ জুন শুক্রবার ছিল এবং সেদিন ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ‘পারফরম্যান্স বন্ড’ পরবর্তী কার্যদিবসে দাখিল করা হয়েছে এবং পেট্রোবাংলাও এটির প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে। সামিট এলএনজি প্রকল্পের আইনজীবীরা নিশ্চিত করেছেন যে, চুক্তির কোনো লঙ্ঘন হয়নি। পাশাপাশি তাঁরা এটাও দাবি করেছেন যে, পেট্রোবাংলা চুক্তির ৩০ দিন সময়সীমার মধ্যে তাদের লঙ্ঘনের বিষয়ে জানায়নি, যার ফলে কোনো প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণে বিলম্ব হলেও তা মেনে নেওয়া হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।


বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান সামিট। গ্রুপটি সরকারকে চুক্তির শর্তসমূহ সম্মান করার এবং বিনিয়োগকারীদের অধিকার সুরক্ষায় ন্যায়সংগত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।


এর আগে, ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর সামিট গ্রুপ একটি এফএসআরইউ (ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট) প্রকল্পের প্রস্তাব দেয়। আগের সরকার কয়লাচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে পরিষ্কার প্রাকৃতিক গ্যাসে ঝোঁকার কৌশলগতভাবে পরিবর্তন আনার অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এরপর, ২০২৩ সালের ১৪ জুন দীর্ঘ দুই বছর ধরে প্রযুক্তিগত এবং চুক্তি সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা নিয়ে আলোচনার পর একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ ছাড়া, একটি দীর্ঘমেয়াদি বিক্রয়-ক্রয় চুক্তি সম্পাদিত হয়। যার অধীনে ২০২৬ সালের অক্টোবর থেকে প্রতি বছর ১৫ লাখ মিলিয়ন এলএনজি সরবরাহ করা হবে।


চুক্তির প্রাথমিক শর্ত পূরণ করতে, এসএলএনজি-২ প্রায় ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে, যা দেশের তৃতীয় এফএসআরইউ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জরুরি। সামিট গ্রুপ জোরালোভাবে সরকারকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে এবং প্রকল্পের অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

তিন দেশ থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টন সার কিনবে সরকার
মন্দিরে দায়িত্বরত পুলিশের গুলি চুরি, ওসিসহ ৮ জন প্রত্যাহার
৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজি বেড়েছে: অর্থ উপদেষ্টা
দুর্গাপূজার ছুটিতে শুল্ক স্টেশনে চালু থাকবে আমদানি-রপ্তানি
আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ শতাংশ: এডিবি
স্মারক রৌপ্য মুদ্রার দাম বাড়লো
ফের বাড়লো স্বর্ণের দাম, ভরি ১ লাখ ৯৫ হাজার
তিন প্রকল্পে ৩ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা দেবে এডিবি
দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ মঙ্গলবার
রোহিঙ্গাদের জন্য ৩.৪ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে জাপান