নাজমুলের সৌজন্যেই বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ দেখল প্রথম সেঞ্চুরি। অথচ শুরুটা তাঁর হয়েছিল বেশ ধীরলয়ে। শুরুতে তিনি ছিলেন ‘দর্শকে’র ভূমিকায়। উইকেটের অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন ওপেনিং জুটিতে সঙ্গী আনিসুল ইসলামের মারকাটারি ব্যাটিং। ১২ বলে নাজমুল করেছেন ৭ রান। বল ভালো ব্যাটে আসছে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে চালানো যায়—সঙ্গী ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে এমন বার্তা তো ছিলই। ষষ্ঠ ওভারে বরিশাল পেসার কামরুল ইসলামও একটু বেশি বাজে বোলিং করে নাজমুলকে ‘সহায়তা’ করলেন খোলস থেকে বের হতে!
কামরুলের ওই ওভারে টানা দুই বলে নাজমুল পুল আর হুকে মারলেন চার-ছয়। আর থামতে হয়নি, দুদ্দাড় পিটিয়ে শুধুই এগিয়েছেন। বরিশালের দুই অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ আর আফিফ হোসেনের শর্ট বলগুলো ডিপ মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা মারতে মোটেও ভুল করেননি। সঙ্গী আনিস ফিফটি তুলে নিয়েছেন ২৫ বলে। নাজমুলের লেগেছে ৩১ বলে, সেটিও পেলেন মিরাজকে পেছনের পায়ে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে!
সাবলীল ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ করা আনিস সুমন খানকে স্ল্যাশ করতে গিয়ে আফিফ হোসেনের ক্যাচ হয়ে থেমেছেন ৩৯ বলে ৬৯ রান করে। এতে ভেঙেছে তাঁদের ৭৪ বলে ১৩১ রানের অসাধারণ জুটিটি। নাজমুলের লক্ষ্য ছিল আরও বড়। টি-টোয়েন্টিতে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার অভিজ্ঞতা তাঁর আগেও আছে। গত বিপিএলেই ঢাকা প্ল্যাটুনের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৫৭ বলে অপরাজিত ১১৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। আজ যেন সেটিকেই ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে খেলছিলেন নাজমুল।
১৬ ওভারেই নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে অবশ্য একটু স্নায়ুচাপে ভুগেছেন। সুমনের করা ১৭তম ওভারে পরপর দুই উইকেট পড়ে যাওয়ায় যা একটু দেরি হয়েছে সেঞ্চুরিটা পেতে। ১৯তম ওভারে তাসকিন আহমেদকে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে ৫২ বলে পেয়ে গেছেন সেঞ্চুরি। সুযোগ ছিল তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রানটা (১১৫*) ছাড়িয়ে যাওয়ার। যে কামরুলকে দিয়ে মার শুরু করেছিলেন, তাঁর বলেই কাভারে তামিম ইকবালের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে যখন ফিরলেন, ততক্ষণে নাজমুলের নামের পাশে জ্বল জ্বল করছে ১১ ছক্কা, ৪ চারে ১৯৮.১৮ স্ট্রাইকরেটে ১০৯ রান।
২০ ওভারের ম্যাচ, অথচ টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটাই দেখা যাচ্ছিল না টুর্নামেন্টে। অবশেষে নাজমুল দেখালেন কীভাবে খেলতে হয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট।