অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) ও রাশিয়াসহ এ জোটের মিত্র দেশগুলো। কয়েক বছর ধরে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক উত্তোলন সীমিত রাখার মাধ্যমে রেকর্ড দরপতন ঠেকিয়ে রাখতে উদ্যোগী হয়েছে। এসব দেশের মিত্রতা সংক্ষেপে ওপেক প্লাস নামে পরিচিত। এগিয়ে নেয়া হচ্ছে জ্বালানি তেলের উত্তোলন হ্রাসসংক্রান্ত চুক্তি।
চলতি বছর শেষে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও এর ভবিষ্যৎ এখনো নির্ধারণ হয়নি। উল্টো জ্বালানি তেল উত্তোলন ধাপে ধাপে বাড়ানোর পথে হাঁটছে ওপেক ও মিত্র দেশগুলো। গত মাসে ওপেক প্লাসের দেশগুলোয় প্রতিদিন গড়ে ১২ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন বেড়েছিল। চলতি মাসে এর পরিমাণ আরো বেড়ে দৈনিক গড়ে ১২ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা ও সরবরাহে বিদ্যমান ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়ে জ্বালানি পণ্যটির রেকর্ড দরপতনের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার কথা। তবে বাস্তবে তা হচ্ছে না। বরং আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে পারে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। এর পেছনে প্রধানতম কারণ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে দেশে দেশে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হওয়া।
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে ফাইজার ও বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিনের আনুষ্ঠানিক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। মেক্সিকো, কানাডাসহ আরো কয়েকটি দেশ জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমোদন দিয়ে রেখেছে। ভ্যাকসিন প্রয়োগের মধ্য দিয়ে মানুষের মনে মহামারীর বিদায় নিয়ে আশাবাদ তৈরি হয়েছে। এ আশাবাদ জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে।
গোল্ডম্যান স্যাকসের কমোডিটিজ বিভাগের প্রধান জেফরি কিউরি সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে জানান, অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বর্তমানের তুলনায় আরো বাড়াতে গেলে জ্বালানি পণ্যটির চাহিদা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। আর করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ এ বিষয়ে আশা বাড়িয়েছে।
করোনাভাইরাস যত দ্রুত বিদায় নেবে, অর্থনীতি গতিশীল হয়ে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা তত বাড়বে। বাড়বে দাম। এ ধারাবাহিকতায় আগামী বছর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৬৫ ডলারে উন্নীত হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ভ্যাকসিনের প্রয়োগে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামে বিদ্যমান ঊর্ধ্বমুখিতা সাময়িক। দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানি তেলের বাজার পরিস্থিতি নির্ভর করবে চাহিদা বৃদ্ধির বিপরীতে সীমিত ওপর। তাই কাঙ্ক্ষিত মূল্যবৃদ্ধির করতে হলে জ্বালানি তেলের চাহিদা ও সরবরাহে ভারসাম্য ফেরানো দরকার।