ভিডিও সামনে আসার পর বাধ্যতামূলক ছুটিতে বিএফআইইউ প্রধান

ভিডিও সামনে আসার পর বাধ্যতামূলক ছুটিতে বিএফআইইউ প্রধান

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামের একাধিক আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি বিভাগ। গভর্নরকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দ্রুত দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। তদন্ত চলাকালে শাহীনুল ইসলামকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।


এমন এক সময়ে শাহীনুল ইসলামের নগ্নভিডিও সামনে এসেছে যখন বিতর্কিত এনা পরিবহণের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্লাহর ফ্রিজ করা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন। গত বছরের নভেম্বরে এনা পরিবহণের মালিক ও তার পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৫০টি অ্যাকাউন্টে ১২০ কোটি টাকা ফ্রিজ করে বিএফআইইউ। তবে চলতি বছরের এপ্রিলে ব্যাংক আল-ফালাহ চারটি অ্যাকাউন্ট পুনরায় ফ্রিজ না করে খন্দকার এনায়েত উল্লাহকে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেয়। সম্প্রতি দুদক এ তথ্য জানতে পেরেছে।


জানা গেছে, সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস থেকে দৈনিক এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন-এমন অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আবেদনে গত ২৭ মে ১২০ কোটি টাকা ফ্রিজ করার আদেশ দেন মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত। অথচ দুদক এখন জানতে পেরেছে এসব হিসাবে আছে আসলে ১০১ কোটি টাকা। অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে বাকি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।


গত বৃহস্পতিবার থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারে তার আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর সোমবার বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন জায়গায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপর এসব ভিডিও সঠিক কিনা যাচাইয়ের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগকে বলা হয়। আপত্তিকর ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে এএফএম শাহীনুল ইসলাম বলেন, আমাকে হেয় করার জন্য কে বা কারা এটা ছড়িয়েছে। এসব ভুয়া। এআই দিয়ে বানানো।


আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৮ আগস্ট পদত্যাগে বাধ্য হন বিএফআইইউর তৎকালীন প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস। দীর্ঘদিন খালি থাকার পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিয়োগ পান শাহীনুল ইসলাম। গভর্নরের নেতৃত্বে গঠিত সার্চ কমিটি যে তিনজনের নাম সুপারিশ করেছিল সেই তালিকায় শাহীনুলের নাম ছিল না। এর পরও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে তাকে প্রধান হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারির পর এ নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়। অভিযোগ রয়েছে, সরকারের একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টার সুপারিশেই তাকে নিয়োগ করা হয়।


এদিকে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে গভর্নরের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।


মঙ্গলবার সচেতন ও দেশপ্রেমী কর্মকর্তা-কর্মচারীর পক্ষে স্মারকলিপি জমা দেন অতিরিক্ত পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য কর্মকর্তা। স্মারকলিপিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাহীনুল ইসলামের একাধিক আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশিত হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকসহ জাতীয় আর্থিক খাতের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, গভর্নরের নেতৃত্বে গঠিত সার্চ কমিটির সুপারিশে নাম না থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক ও দলীয় প্রভাবের কারণে শাহীনুল ইসলামকে বিএফআইইউ প্রধান হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, যা দুঃখজনক। তারা শাহীনুল ইসলামকে অবিলম্বে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া ও দ্রুত তদন্ত পরিচালনা করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

তিন দেশ থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টন সার কিনবে সরকার
মন্দিরে দায়িত্বরত পুলিশের গুলি চুরি, ওসিসহ ৮ জন প্রত্যাহার
৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজি বেড়েছে: অর্থ উপদেষ্টা
দুর্গাপূজার ছুটিতে শুল্ক স্টেশনে চালু থাকবে আমদানি-রপ্তানি
আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ শতাংশ: এডিবি
স্মারক রৌপ্য মুদ্রার দাম বাড়লো
ফের বাড়লো স্বর্ণের দাম, ভরি ১ লাখ ৯৫ হাজার
তিন প্রকল্পে ৩ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা দেবে এডিবি
দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ মঙ্গলবার
রোহিঙ্গাদের জন্য ৩.৪ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে জাপান