বাংলাদেশ বিজ্ঞান এবং শিল্প গবেষণা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত নভেম্বরের শুরুতে বিসিএসআইআর করোনাভাইরাসের পাঁচটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে। তাতে পাওয়া মিউটেশনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসের মিল রয়েছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে বিসিএসআইআর।
কোভিড-১৯ বহনকারীদের পরিচয় এবং ঠিকানা জানার চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলেও ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন রেফারেল সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিসিএসআইআর।
বিসিএসআইআরের জীবতাত্ত্বিক গবেষণা বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম খান বলেন, নভেম্বরের শুরুতে দেশে কোভিড-১৯ এর নতুন ধরনের মিউটেশন পাওয়া গিয়েছিল।
পাঁচটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করার সময় নতুন এই মিউটেশন আমাদের নজরে আসে। আন্তর্জাতিকভাবে যেখানে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের তথ্য জমা দেওয়া হয়, সেখানে দেখেছি যে রাশিয়া এবং পেরুতে এর আগে একই ধরনের মিউটেশন দেখা গেছে। তবে ওই দেশ দুটিতে শুধু একজন করে ব্যক্তির নমুনায় এই মিউটেশন পরিলক্ষিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, ইংল্যান্ডে আমাদের অনেক পরে গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে এ ধরনের মিউটেশন ধরা পড়েছে। যুক্তরাজ্যে প্রাপ্ত নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসে একটি মিউটেশন ঘটেছে স্পাইক প্রোটিনে, যাকে বলা হচ্ছে পি-৬৮১ এইচ মিউটেশন। বাংলাদেশে প্রাপ্ত মিউটেশনটি হলো পি-৬৮১-আর।
সেলিম খান বলেন, যুক্তরাজ্যের আর বাংলাদেশের মিউটেশনের পজিশন এক। সেটাই শঙ্কার বিষয়। এ জন্য এখন আমাদের জিনোম সিকোয়েন্সিয়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ভাইরাসটির বৈশিষ্ট্য আরও মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে বিষয়টি আরও পরিস্কার হবে বলেও তিনি আশা করেন।
সেলিম খান আরও বলেন, যে পাঁচটি নমুনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছি, সেগুলোর দাতাদের ঠিকানার ঘরে দুটিতে ঢাকা উত্তর এবং তিনটিতে শুধু ঢাকা লেখা ছিল। তারা সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন রেফারেল সেন্টারের কাছ থেকে ভাইরাসগুলোর নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন।
নমুনা সংগ্রহের সময় একটি নির্দিষ্ট কোড নম্বর নেওয়া হয়। ওই কোড নম্বর ন্যাশনাল রেফারেল সেন্টারের সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। তাদের এই পাঁচজনের নাম-ঠিকানা এবং ফোন নম্বর সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। আশা করছি, দু দিনের মধ্যে নমুনাদাতাদের খুঁজে বের করা সম্ভব হবে।
এদিকে নতুন ভাইরাস নিয়ে শঙ্কিত না হয়ে বিশ্ববাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।