বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় মেটাতে সরকার এই বন্ড ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে বৈধ ও নিরাপদ বিনিয়োগের নতুন একটি ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। কারণ দেশি-বিদেশি যেকোনো ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান এই বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এই বন্ড চালুর ফলে প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ওপর সরকারের ঋণনির্ভরতা কমবে। সেই সঙ্গে কমে আসবে সুদব্যয়ও। আবার সরকারকে অর্থায়নে প্রচলিত ধারার ব্যাংকের চাপও কমবে। ইসলামী ব্যাংকগুলোর অলস টাকা বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি বাস্তবায়নও সহজ হবে।
জানা যায়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সারা দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প’-এর সম্পদের বিপরীতে আট হাজার কোটি টাকার এই বন্ড চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক চার হাজার কোটি টাকা করে দুই দফায় এই বন্ড বাজারে ছাড়বে। এ প্রকল্পের জন্য ছাড়া বন্ডটির নাম দেওয়া হয়েছে ইজারা সুকুক’।
এতে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন একজন বিনিয়োগকারী। এ বন্ডের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। বার্ষিক প্রাক্কলিত মুনাফার হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৪.৬৯ শতাংশ। ষাণ্মাসিক ভিত্তিতে এই মুনাফা দেওয়া হবে।
সুকুক’ একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে সিলমোহর লাগিয়ে কাউকে অধিকার ও দায়িত্ব দেওয়ার আইনি দলিল। তবে প্রচলিত বন্ড ও
সুকুক’ বন্ডের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। প্রচলিত বন্ড সুদভিত্তিক হওয়ায় তা শরিয়াহসম্মত নয়। আর সুকুক’ হচ্ছে এমন একটি বিনিয়োগ, যাতে সম্পদের ওপর মালিকানা দেওয়ার নিশ্চয়তা থাকে। সাধারণত সুকুকধারীরা সম্পদের মালিকানা লাভ করেন এবং মুনাফা পান।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এখন থেকে প্রচলিত ট্রেজারি বিল ও বন্ড এবং সঞ্চয়পত্রের পাশাপাশি শরিয়াহভিত্তিক এই বন্ডও হবে সরকারের অর্থ সংগ্রহের নতুন একটি উৎস, যে অর্থ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যয় করা হবে।