কেনিয়ার অর্থায়নে পরিচালিত শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপিঠ কিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলার পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে এবছরের (২০২১) জানুয়ারি থেকে বছরব্যাপী বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা আনিসুর রহমানের মহাকাব্যিক স্বগতসংলাপ ’আমি শেখ মুজিব’ নাটকটির সঙ্গে আরো দুটি নাটক পড়ানো হবে। অপর নাটক দুটি হচ্ছে ’দাবিত ইসাক’ এবং ’মন্ত্রী ও হায়েনা’।
এবছর অক্টোবরে নাটকটি কিসি বিশ্বদ্যালয়ের মূল মিলনায়তনে, কিসট্রেক নাট্যশালায়, গ্যাটে ইনস্টিটিউট নাইরোবি, কিসি ও নাইরোবি শহরের বাসে ‘আমি শেখ মুজিব’ এপিক মনোলগটি মঞ্চায়িত হবে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কেনিয়ার নাট্যকলার শিক্ষক, কবি ও নাট্যনির্দেশক ক্রিস্টোফার ওকেমওয়া নাটকটির নির্দেশনা দিচ্ছেন। কিসট্রেক থিয়েটার ইন্টারন্যাশনাল এবং কিসি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে নাটকটি প্রযোজনা করছে।
এ প্রসঙ্গে ক্রিস্টোফার ওকেমওয়া বলেন, এই তিনটি নাটকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। মানবাধিকার একটি চিরন্তন বিষয়। নাটক তিনটি কেনিয় সমাজের জন্যে প্রাসঙ্গিক এবং লেখাগুলোতে নাট্যকলার শিক্ষার্থীদের জন্যে প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি জাতির আধুনিক রূপকার, একটি রাষ্ট্রের স্থপতি। প্রত্যন্ত জনপদ টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নিয়ে কিভাবে তিনি ধাপে ধাপে বাঙালির জাতিরাষ্ট্রের স্থপতি হলেন, দেশ ও দেশের মানুষকে মুক্তির পথ দেখালেন, তার অনেকটা নানাভাবে উঠে এসেছে এই নাটকে। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় তার মনের কী অবস্থা, তা কিছুটা ঘটনা পরম্পরায়, কিছুটা কল্পনায়, গদ্যে পদ্যে মিলিয়ে লেখা এপিক মনোলগ ’আমি শেখ মুজিব’।
লেখক আনিসুর রহমান বলেন, মহাকাব্য ও মঞ্চনাটকের বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রেখে সংলাপটিতে ভারতবর্ষের বিশ শতকের ইতিহাসের ঘটনাক্রম এবং বাংলাদেশের জন্মের গল্প উপজীব্য হয়েছে ।
তিনি বলেন, মহাকাব্যের নায়ক বঙ্গবন্ধুর প্রয়াণের মধ্য দিয়ে স্বাগত সংলাপটি শেষ হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে নেপালের শীর্ষস্থানীয় নাট্যশালা ওয়ান ওয়ার্ল্ড থিয়েটার নাটকটি নেপালি ও ইংরেজি ভাষায় মঞ্চে আনে। এপিক মনোলগটির মূল বাংলা ভাষ্য ২০১৬ সালে প্রথম প্রকাশ পায়। বাংলাদেশের অনন্যা প্রকাশনী পরে এটি বই আকারে প্রকাশ করে। ইতোমধ্যে ‘এপিক মনোলগটি কয়েকটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং নাট্যকলার পাঠ্যসূচিত অন্তর্ভুক্ত ও মঞ্চায়িত হয়েছে।
‘আমি শেখ মুজিব’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রিটেনের ওয়েলস বিশ্ববিদ্য্যালয়, সুইডেনের লুন্দ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিকস একেডেমিসহ নানা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি আর সেমিনার কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এই সংস্করণে প্রচ্ছদে ব্যবহৃত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এঁকেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন চিত্রশিল্পী নিসার হোসেন।